হোম > ছাপা সংস্করণ

পরিত্যক্ত ভবনে ঝুঁকিতে বাস

রিমন রহমান, রাজশাহী

রাজশাহী নগরীর টিবিপুকুর এলাকায় পাঁচটি পরিত্যক্ত ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস করছে ৩২টি পরিবার। ভবনগুলো অনেক আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। তাও বাসা ভাড়া বাঁচাতে পরিবারগুলো বছরের পর বছর অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বাস করছেন।

পরিত্যক্ত এই আবাসিক ভবনগুলো রাজশাহী ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি)। পরিত্যক্ত ভবন হওয়ায় এর ভাড়া দেওয়া লাগে না। ভবনের বাসিন্দাদের পরিবারের কেউ আইএইচটি, কেউ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল কিংবা স্বাস্থ্য বিভাগের অন্য কোনো দপ্তরের সাবেক বা বর্তমান চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। নিম্নআয়ের মানুষগুলো শুধু বাসাভাড়া বাঁচাতেই এখানে বাস করছেন।

গত ২০ নভেম্বর সকালে টিবিপুকুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণভাবে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে দুটি দোতলা, একটি তিনতলা ও দুটি একতলা ভবন। ভবনগুলো একেবারেই জরাজীর্ণ। খুলে খুলে পড়েছে পলেস্তারা, দেয়ালে দেয়ালে জন্মেছে গাছপালা। বিভিন্ন জায়গায় দেখা দিয়েছে ফাটল। দোতলা একটি ভবনের কাছে গিয়ে দেখা গেল, একটি জানালারও রড নেই। রডের বদলে সেট করা হয়েছে কাঠ।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বাসিন্দাদের বেশির ভাগই এখানে বসবাস নিয়ে কথা বলতে চান না। তবে কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, দিনরাত তাঁরা আতঙ্কে থাকেন। যেকোনো সময় গায়ের ওপর ভবন ভেঙে পড়তে পারে, এই চিন্তায় তাঁদের দুই চোখের পাতা এক হয় না। আবার যেকোনো সময় তাঁদের উচ্ছেদ করা হতে পারে। উচ্ছেদ করলে সন্তানদের নিয়ে কোথায় উঠবেন তা নিয়েও তাঁরা চিন্তিত থাকেন।

বাসিন্দারা বলেন, আগে ভবনগুলোতে শুধু আইএইচটির কর্মচারীরা থাকতেন। কেউ কেউ ভবন ছেড়ে চলে যাওয়ায় রামেক হাসপাতাল, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল ও সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের কর্মচারীরাও ভবনগুলোতে পরিবার নিয়ে উঠেছেন। অনেকে চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন। তাও তাঁরা পরিবার নিয়ে এখানে থাকেন।

দোতলা ভবনের নিচতলায় থাকেন আবদুর রাজ্জাক। তিনি জানালেন, তাঁর স্ত্রী হাসিনা খাতুন রামেক হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। স্থায়ী চাকরি নয়, দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী তিনি। যা বেতন পান তা দিয়ে বাসাভাড়া করে থাকা সম্ভব নয়। তাই ঝুঁকি নিয়ে এখানেই থাকেন। ঝুঁকিপূর্ণ এসব ভবন ছেড়ে দেওয়ার জন্য তাঁদের আটবার নোটিশ করা হয়েছে। তাও তাঁরা ছেড়ে যাননি। ‘নিজ দায়িত্বে’ তাঁরা এখানে আছেন।

দোতলা আরেকটা ভবনের বারান্দায় বসেছিলেন শরিফা বেগম। তিনি জানালেন, তাঁর স্বামী আমিরুল ইসলাম আইএইচটির কর্মচারী ছিলেন। অনেক আগেই অবসর নিয়েছেন। এখন বাসা ভাড়া করে সেখানে গিয়ে থাকার মতো আর্থিক সক্ষমতা তাঁদের নেই। তাই এ ভবনেই প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে আছেন। শরিফা জানান, এসব ভবনে ৩২টি পরিবারের শতাধিক মানুষ থাকেন। ঝুঁকি নিয়ে শিশুরাও আছে পরিবারে।

রাজশাহী আইএইচটির অধ্যক্ষ ফারহানা হক বলেন, ভবনগুলো গণপূর্ত বিভাগ অনেক আগেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। এরপরও কিছু মানুষ থাকেন। ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও তাঁরা ‘নিজ দায়িত্বে’ থাকেন। অনেকে ভেতরটা নিজেদের মতো করে সংস্কার করেছেন। তিনি জানান, পাঁচটি পরিত্যক্ত ভবন এবং আশপাশের অনেক জায়গা আইএইচটির। কিছু জায়গা রাস্তা সম্প্রসারণ করার জন্য সিটি করপোরেশন গ্রহণ করবে বলে তিনি চিঠি পেয়েছেন। বাকি জায়গায় কী করা হবে সে সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি।

রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ভবনগুলো আসলেই খুব ঝুঁকিপূর্ণ। করোনার কারণে দেড় বছরে আমরা সেগুলো নিয়ে কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি। তবে সম্প্রতি আমি আমার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিটিং করেছি। দ্রুতই আইএইচটির অধ্যক্ষের সঙ্গে মিটিং করব। একটা ডিজিটাল সার্ভেও করব। তারপর ভবনগুলো ভেঙে ফেলা হবে। প্রয়োজন থাকলে নতুন কোয়ার্টার করা হবে।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ