পাবনার আটঘরিয়া পৌর এলাকায় ফসলের মাঠগুলোতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। কৃষিজমিতে অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের ফলে পানি নিষ্কাশনের নালা বন্ধ হয়ে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে যাওয়ায় আবাদি জমিগুলো এখন অনাবাদি হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌরসভার ধলেশ্বর, চক ধলেশ্বর, উত্তর চক ও কন্দর্পপুরসহ ছয়টি মাঠে তিন ফসলি জমিগুলোতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পৌর এলাকার প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির এই পরিণতি হয়েছে।
উত্তর চকের কৃষক আবু দাউদ বলেন, ‘আমি নিজের এবং বর্গা নিয়ে ছয় বিঘা জমি চাষ করতাম। এখন জলাবদ্ধতার কারণে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। গেল দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে বিলের মধ্যে কৃষিজমিতে যথেচ্ছভাবে পুকুর খননের কারণে পানি নিষ্কাশনের নালাটি ভরাট হয়ে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। এখন সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধ হয়ে পড়ছে মাঠ।’
আরেক কৃষক আব্দুল খালেক জানান, ধলেশ্বর মাঠে গত রোপা আমন মৌসুমে ধানের চাষ করতে বীজতলায় চারা উৎপাদন করা হলেও অতিরিক্ত জলাবদ্ধতার কারণে আবাদ করা সম্ভব হয়নি। কয়েক পশলা বৃষ্টিতেই দেখা দিয়েছিল জলাবদ্ধতা। এই পানি এখনো শুকায়নি, ফলে রবিশস্য চাষেও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।
এলাকার কৃষকেরা জানান, জলাবদ্ধতা দূর করতে কৃষিজমিতে পুকুর খনন বন্ধ এবং পানি নিষ্কাশনের নালা সংস্কার করতে হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সজীব আল মারুফ বলেন, অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খননের কারণে নালা বন্ধ হয়ে পড়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি স্থানীয় ফোরামে উপস্থাপন করে পৌরসভার মেয়রের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আটঘরিয়া পৌরসভার মেয়র মো. শহিদুল ইসলাম রতন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পৌর এলাকার মাঠগুলো কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ। পানি নিষ্কাশনের জন্য একাধিকবার পদক্ষেপ নিয়েও কোনো প্রতিকার পাইনি। তবে সামনে বড় প্রকল্প গ্রহণ করে এ সমস্যা সমাধানের পরিকল্পনা রয়েছে।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাকসুদা আক্তার জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কৃষি বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।