হোম > ছাপা সংস্করণ

এক সেতু ঘিরে হাজারো স্বপ্ন

বদরুল ইসলাম মাসুদ, বান্দরবান

মাত্র ১০০ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু হলে লাখো মানুষের কষ্ট লাঘব হবে। বান্দরবানের সঙ্গে চট্টগ্রামের চন্দনাইশের সরাসরি সংযোগ স্থাপিত হবে। ধোপাছড়িকে কেন্দ্র করে পর্যটন ও অর্থনৈতিক জোন (ইকোনমিক জোন) গড়ে উঠবে। চট্টগ্রাম ও বান্দরবান জেলার মধ্যে স্থাপিত হবে নতুন সেতুবন্ধ।

এ জন্য তেরি করতে হবে বান্দরবানের ধোপাছড়ি খালের ওপর মাত্র ১০০ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ধোপাছড়ি খালের পানি অনেকটা শুকিয়ে গেছে। ছোট একটি সাঁকো দিয়ে পার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা।

ধোপাছড়ি ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল আলিম বলেন, স্বাধীনতার আগ থেকেই ধোপাছড়ি খালের ওপর সেতু হবে বলা হচ্ছে। দেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছর হলো। এখনো সেতু নির্মাণ হয়নি। সবাই শুধু আশা দিচ্ছেন। কাজ হচ্ছে না। ধোপাছড়ি খালের ওপর একটি সেতু হলে লাখো মানুষের দুঃখ-কষ্ট লাঘব হবে। সড়কে যোগাযোগের ফলে এলাকার কৃষির বিস্তার ঘটবে। পর্যটন ও অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠবে।

ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, ধোপাছড়ি খালের ওপর সেতু নির্মাণের বিষয়ে চন্দনাইশের সাংসদ নজরুল ইসলাম চৌধুরী চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিংয়ের আগ্রহ রয়েছে। আশা করছি, এবার মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পাবে।

একই রকম কথা বলেন ইউপি সদস্য মজিবুল হক খোকা। তিনি বলেন, ধোপাছড়ি খালের পূর্ব পাড়ে তাঁর ওয়ার্ড, যা শঙ্খের কূল নামে পরিচিত। এ ওয়ার্ডে চার হাজারের বেশি মানুষের বসবাস। অপর পাড়ে ধোপাছড়ি বাজার ও উচ্চবিদ্যালয়। সেতু না থাকায় বর্ষায় শিক্ষার্থীদের নৌকায় স্কুলে যেতে হয়। অনেক সময় নৌকা উল্টে দুর্ঘটনা ঘটে।

মজিবুল হক খোকা আরও বলেন, শুকনো মৌসুমে খালে পানি কম থাকায় উঁচু রাস্তা দিয়ে নিচে নেমে পানির মধ্যে দিয়ে হেঁটে যেতে হয়। একটি গাছের সাঁকো থাকলেও তা দিয়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষের যাতায়াত সম্ভব না।

কুহালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সানু প্রু মারমা বলেন, ধোপাছড়ির সঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জড়িয়ে আছে। ধোপাছড়ি গ্রামীণ এলাকায় একটি বড় বাজার হিসেবে পরিচিত। তাঁর ইউনিয়ন ও পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের অনেক গ্রামের লোকজন নিয়মিত ধোপাছড়ি বাজারে বেচাকেনা করেন। সেতুটি হলে যোগাযোগ সহজ হবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী নেজাম উদ্দিন বলেন, তিনি চট্টগ্রামে ব্যবসা করেন। ধোপাছড়ি খালেও ওপর সেতু না থাকায় তাঁকে দীর্ঘপথ ঘুরে বান্দরবানের রেইছা হয়ে বাড়ি আসতে হয়। ধোপাছড়ি খালের ওপর সেতু হলে প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ কমে যাবে। এতে সময়, অর্থ সাশ্রয় হবে।

পূর্বধোপাছড়ির ব্যবসায়ী আরিফ মইনুদ্দিন, মোস্তাক সওদাগর, কৃষক শমসের আলীসহ কয়েকজন বলেন, ধোপাছড়ি খালের ওপর সেতু হলে এই এলাকার অর্থনীতির চেহারা পাল্টে যাবে। কৃষিপণ্য সহজে ও কম সময়ে বান্দরবান ও চট্টগ্রামে নিয়ে বিক্রি করা যাবে।

ধোপাছড়ি উচ্চবিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণির ছাত্র আমিরুল গণি ফাহাদ ও ষষ্ঠ শ্রেণি ছাত্র তাছিনুর রহমানসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, তারা শঙ্খের (সাঙ্গুকে শঙ্খ নদীও বলা হয়) পর্ব পাড় থেকে পশ্চিম পাড়ে ধোপাছড়ি স্কুলে যায়। সেতু না থাকায় তাদের যেতে খুব কষ্ট হয়। বর্ষাকালে ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যেতে হয়।

বান্দরবান সড়ক ও জনপথ বিভাগের সদর উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী টোয়েন চাকমা বলেন, তাঁরা অনেক দিন সার্ভে করে ধোপাছড়ি খালের ওপর সেতু নির্মাণের জন্য একটি নকশা তৈরি করেছেন।

উপসহকারী প্রকৌশলী ও ইস্টিমিটর মো. শরীফুজ্জামান বলেন, সড়ক বিভাগ ধোপাছড়ি খালের ওপর ৯৯ দশমিক ৭৫ মিটার সেতু নির্মাণের জন্য একটি নকশা করেছে। সেতুর প্রস্থ হবে ১৫ দশমিক ৫৯ মিটার। এ জন্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা ব্যয় হতে পারে।

বান্দরবান সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোসলেহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ধোপাছড়ি খালের ওপর সেতু নির্মাণের জন্য সড়ক বিভাগের প্রকৌশলীরা একটি নকশা তৈরি করেছেন। এই নকশা ঢাকায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নকশা বিভাগে পাঠানো হয়েছে। নকশা অনুমোদন হলে প্রাক্কলন তৈরি করে সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা যাবে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ