বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর যমুনা এখন মরুভূমি। আর এই বালুর নিচেই তাঁদের বেঁচে থাকার স্বপ্ন বুনেছেন চরাঞ্চলের কৃষকেরা। বন্যার ক্ষতি পোষাতে যমুনার বুকে জেগে ওঠা চরে বাদাম চাষ করেছে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাদামের বাম্পার ফলনের আশাবাদী চরাঞ্চলের কৃষকেরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যমুনা চরাঞ্চলের ২ হাজার ১২০ হেক্টর জমির বাদাম চাষ করা হয়েছে। এর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার মেট্রিক টন। বাদাম চাষ সহজ ও লাভজনক। তা ছাড়া বাড়তি সার ও সেচের প্রয়োজন হয় না। তাই উপজেলার অর্জুনা, গাবসারা, গোবিন্দাসী ও নিকরাইল ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা বাদাম চাষে আগ্রহী হন।
বাদাম চাষি মো. আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমরা প্রতি বছর বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বাদামের চাষ করি। এ ছাড়া স্থানীয় হাট-বাজার গুলোতে বাদামের চাহিদা অনেক বেশি। এ বছর ৯ বিঘা জমিতে বাদাম চাষ করেছি। বিঘা প্রতি ৭ থেকে ১২ মন বাদাম উৎপাদন হয়।
মান্নান আরও বলেন, দাম ভালো হলে এক মণ বাদাম ১ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি করা যায়। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনা মূল্যে আমাদের উন্নত মানের বাদাম বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন।
বাদাম চাষি মো. আনোয়ার বলেন, ৭ বিঘা জমিতে বাদামের চাষ করেছি। গত বছরের চেয়ে এবার বাদামের বাম্পার ফসলের সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এ বছর ৫০-৬০ মণ বাদাম ঘরে তুলতে পারব বলে আশাবাদী। এ ছাড়া একটু বৃষ্টি হলে আমাদের ফলন আরও বৃদ্ধি পেত বলে জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আল মামুন রাসেল বলেন, ‘আমাদের যমুনা চরাঞ্চলের বালি মাটি বাদাম চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। এখানকার কৃষকেরা বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বাদাম চাষ করেন। আমরা বাদামের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছি।’