নড়াইলের কালিয়া উপজেলার সর্ববৃহৎ চাচুড়ী বিল ও পাটেশ্বরী বিলে নদীর জোয়ার-ভাটার পানি নিষ্কাশিত হয় ছোট-বড় চারটি খাল দিয়ে। কিন্তু নদী থেকে খালের মাধ্যমে পানি চলাচলের অধিকাংশ স্লুইসগেটের দরজা ভেঙে অকেজো হয়ে পড়েছে। ফলে চলতি বোরো মৌসুমে সেচ ও জলাবদ্ধতার সংকটে পড়েছেন নড়াইলের শস্যভান্ডার খ্যাত চাচুড়ী বিলের কৃষকেরা।
সরেজমিন দেখা যায়, স্লুইসগেটগুলোর কোনোটা মেরামত চলছে, আবার কোনোটা অকেজো। দড়ি দিয়ে বেঁধে চলছে স্লুইসগেট ওঠানো-নামানোর কাজ। এভাবে বছরের পর বছর ধরে চলছে নদী থেকে খালের পানি জমিতে ঢুকিয়ে সেচকাজ। জোয়ারের পানি খালে ঢুকলেও অকেজো স্লুইসগেটের মাধ্যমে তা আর বের হতে পারছে না।
চাচুড়ী আর পাটেশ্বরী বিলের মধ্যে চিত্রা নদীর পানি খালে ঢোকে পাটেশ্বরী স্লুইসগেটের মাধ্যমে। পাটেশ্বরী গেটের ১০টি দরজাই নষ্ট। পাশের টাকিমারার ২টা, যাদবপুর জোলার খালসহ সব কটি চলছে একইভাবে।
কালিয়া উপজেলার পুরুলিয়া ইউনিয়নের দিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক মিল্টন সর্দার বলেন, নদীতে জোয়ার এলে ভাঙা স্লুইসগেটে দিয়ে পানি ঢুকে পড়ে। কিন্তু ভাটার সময় পানির বেগ কম থাকায় ঠিকমতো বের হতে পারে না। তা ছাড়া স্লুইসগেটের কপাট খোলা ও বন্ধ করার কোনো তদারকি না থাকায় সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে।
পাঁচগ্রাম ইউনিয়নের মহিষখোলা গ্রাম ও পাটেশ্বরী গ্রামের একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় একই কথা। দ্রুতই এ সমস্যার সমাধান চান তাঁরা।
কালিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবীর কুমার বিশ্বাস বলেন, শীত মৌসুমে দুবার ভারী বৃষ্টি, স্লুইসগেট দিয়ে অতিরিক্ত জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ায় এবার চাচুড়ী-পাটেশ্বরী বিলের বোরো উৎপাদন পিছিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর দেরিতে রোপণ করা হলে ফসল ঘরে তুলতে বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ মাস লাগবে। তখন অনেক প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা থাকে। ফলে মারাত্মক ক্ষতিতে পড়তে পারেন কৃষকেরা।
পাঁচগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, পলি পড়ে খালগুলো ভরাট হয়ে গেছে। ফলে জোয়ারের পানি প্লাবিত হয়ে ফসলের জমিতে ঢুকে পড়ছে। দ্রুতই স্লুইসগেটগুলো মেরামতের পাশাপাশি খালগুলোরও সংস্কার প্রয়োজন।
নড়াইল পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জ্বল কুমার সেন বলেন, বর্তমানে সাউথ ইস্ট প্রকল্পের আওতায় স্লুইসগেটের রেগুলেটর মেরামতের কাজ চলমান আছে। মেরামত হলেই আশা করি বিলের পানি নিষ্কাশিত হতে আর কোনো সমস্যা থাকবে না।