হোম > ছাপা সংস্করণ

গম উৎপাদন ব্যাহতের শঙ্কা

আনিসুল হক জুয়েল, দিনাজপুর

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গবাদিপশুর খাদ্যের দামও। খৈল, খড়, ভুসিসহ দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে সবুজ ঘাসও। এতে দিশেহারা হয়ে দিনাজপুরের কৃষকেরা গমের চারা কেটে তা গোখাদ্য হিসেবে বাজারে বিক্রি করছেন।

জেলা কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে জেলায় গমের আবাদ এক-তৃতীয়াংশ কমেছে। এখন খেত থেকে বাড়ন্ত গমের চারা কেটে বিক্রি করা হলে উৎপাদনের ওপর প্রভাব পড়তে পারে।

বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. গোলাম ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, গম ও ভুট্টার জন্য শীতপ্রধান এলাকা বেশি উপযোগী। দিনাজপুরসহ এতদ্‌ঞ্চলে গমের ফলন বেশ ভালো হয়। বর্তমানে অনেকে আমন ও বোরোর মধ্যবর্তী ফসল হিসেবে কিছু অর্থকরী ফসলের আবাদ করে থাকেন। বাংলাদেশ গম ও ভুট্টা গবেষণা ইনস্টিটিউট ১০ বছর আগে ট্রিটিকেল-১ ও ট্রিটিকেল-২ নামে গো-খাদ্য উপযোগী দুটি গমের জাত উদ্ভাবন করেছিল। যেটি আবাদ করলে হেক্টরে ২০ থেকে ৩৫ টন পর্যন্ত গমের চারা উৎপাদন করা সম্ভব। কিন্তু মূল উৎপাদন ব্যাহত করে গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ব্যাহত হতে পারে।

কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, গত বছর জেলায় ৫ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছিল। আর এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৫ হাজার হেক্টর জমিতে। কিন্তু আবাদ হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে।

দিনাজপুর সদর, ফুলবাড়ী ও বিরামপুর উপজেলার কয়েকটি গ্রামে ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও গমের শিষ সবেমাত্র বের হয়েছে, আবার কোথাওবা শিষ বের হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। কিন্তু ফুলবাড়ী ও বিরামপুরের বেশ কয়েকটি স্থানে কৃষক সেই বাড়ন্ত গমের চারা কাস্তে দিয়ে গোড়া থেকে কেটে বাঁধছেন আঁটি। তা শহরের বাজারে বিক্রি করছেন ৫ থেকে ৮ টাকা আঁটি।

কৃষকেরা জানান, গম চাষে প্রতি বিঘা জমি তৈরি, চারা রোপণ, সার, বীজ, কীটনাশক, সেচ খরচ, শ্রমিকের মজুরি, গম কাটা ও মাড়াই পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। আর বিঘাপ্রতি গমের ফলন হয় ৮ থেকে ১০ মণ। সেই গম বিক্রি করে বিঘায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব। কিন্তু তাতে তেমন কোনো লাভ থাকে না। কিন্তু বর্তমানে বাজারে গবাদিপশুর খাদ্যের দাম বেড়ে গেছে, পাশাপাশি প্রয়োজনের তুলনায় সবুজ ঘাসের সরবরাহও কম। এ সুযোগে গমের চারা ঘাস হিসেবে বিক্রি করে নগদ টাকা পাওয়া যাচ্ছে। সার্বিক বিচারে এখান থেকে তুলনামূলক লাভ বেশি থাকছে বলে জানান তাঁরা। এ ছাড়া এখন গম তুলে নিলে জমিতে বোরো লাগানো সম্ভব। ধানের ভালো দাম থাকায় এতে করে দুদিক থেকেই লাভবান হওয়া যাবে।

ফুলবাড়ী উপজেলার নিমতলা এলাকার উর্বশী সিনেমা হলের সামনে কয়েকজন কৃষক গমের চারা গো-খাদ্য হিসেবে বিক্রি করছেন। এদের একজন পশ্চিম গৌরীপাড়া এলাকার আফসার আলী। তিনি জানান, গরুর খাবার হিসেবে এর ভালো চাহিদা থাকায় প্রতিদিন গমের চারা নিয়ে এসে আঁটি ৫ টাকা হিসেবে বিক্রি করছেন।

একই উপজেলার শিবনগর এলাকার ইসরাফিল ইসলাম বলেন, ‘এবার আবহাওয়ার কোনো ঠিক নাই। গম কাটার সময় বৃষ্টি হলে গম নষ্ট হয়ে যায়। আবার গমের কেমন দাম পাওয়া যাবে, তারও ঠিক নাই। এর থেকে এখনই গাছ বিক্রি করলে ভালো দাম পাওয়া যায়।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মো. খালেদুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘চলতি মৌসুমে এমনিতেই লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক-তৃতীয়াংশ কম আবাদ করা হচ্ছে। এর ওপর যদি কাঁচা অবস্থাতেই কেটে গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়, তবে গম উৎপাদনে প্রভাব পড়তে পারে। আমরা ইতিমধ্যেই বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছি। বিস্তারিত জেনে করণীয় নির্ধারণ করা হবে।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ