তওবা অর্থ ফিরে আসা, প্রত্যাবর্তন করা। পরিভাষায় কোনো পাপকাজ ছেড়ে দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় ফিরে আসাকে তওবা বলে। মানবজীবনে তওবার গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ তওবার মাধ্যমেই কেবল আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা সম্ভব। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর কাছে তওবা করো, খাঁটি তাওবা।’ (সুরা আত-তাহরিম/৮)
প্রতিটি মানুষের জন্য তওবার সঙ্গে সংযুক্ত থাকা আবশ্যক। এতে আল্লাহ বান্দার প্রতি খুশি হন এবং তাকে ক্ষমা করেন। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীকে ভালোবাসেন।’ (সুরা বাকারা/ ২২২) মহানবী (সা.) বলেন, ‘হে মানবজাতি, তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা করো। কেননা আমি প্রতিদিন শতবার তাঁর কাছে তওবা করি।’ (মুসলিম)।
ভুল বুঝতে পারা মাত্রই তওবা করতে হবে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর বান্দার তওবা গ্রহণ করেন, যতক্ষণ না সে মৃত্যুযন্ত্রণায় গরগর করে।’ (তিরমিজি) তওবার শর্ত হলো, পাপকাজ সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করতে হবে। পাপের জন্য অনুশোচনা করতে হবে, লজ্জিত ও অনুতপ্ত হতে হবে এবং ওই পাপ দ্বিতীয়বার করবে না বলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
তওবা করার সুন্নাত নিয়ম হলো, পাপকাজ আল্লাহর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হলে ব্যক্তি সর্বপ্রথম সুন্দরভাবে অজু করবে এবং আল্লাহকে হাজির-নাজির জেনে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে। এরপর আসতাগফিরুল্লাহা রাব্বি মিন কুল্লি যানবিও ওয়া আতুবু ইলাইহি ৭ বার, সুরা ফাতিহা একবার, সুরা ইখলাস তিনবার ও দরুদ শরিফ ১১ বার পাঠ করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। আর যদি পাপকাজ বান্দার হকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথা কারও অধিকার হনন হয়, তখন বান্দার হক আদায় করবে অথবা তার কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ার পর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় তওবা গ্রহণযোগ্য হবে না।
ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়