ফাইনালের আগে সংবাদ সম্মেলনে ট্রফি হাতে অধিনায়কদের ছবি তোলার একটা অলিখিত প্রথা। ট্রফি হাতে অধিনায়কেরা তাঁদের দলের সমর্থক যেন বলতে চান, এই শিরোপা জিততে তাঁরা প্রস্তুত। ছবি তুলতে গিয়ে সাবিনা খাতুনের হাতে গতকাল যখন সাফের শিরোপা উঠল, তখন মৃদু হাসিতে সামনে দাঁড়ানো নেপাল অধিনায়ককে বাংলাদেশ অধিনায়ক যেন বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, এবার আর এই শিরোপা হাতছাড়া করতে চান না তিনি।
২০১৬ সাফেও এ রকম একবার শিরোপা হাতে ছবি তুলতে হয়েছিল সাবিনাকে। কিন্তু অনভিজ্ঞ একটা দল নিয়ে সেবার ফাইনালে ভারতের কাছে হেরে স্বপ্ন ভেঙেছিল সাবিনাদের। গত ছয় বছরে সেই দলটা পরিণত হয়েছে বয়স আর অভিজ্ঞতায়। বেড়েছে আত্মবিশ্বাস। সেই আত্মবিশ্বাস দিয়েই নেপালকে তাদের মাটিতে হারিয়ে প্রথম সাফ জিততে চায় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল।
কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্থানীয় সময় বিকেল ৫টায় শুরু হবে বাংলাদেশ-নেপাল ফাইনালের লড়াই। ফাইনালের চাপ নিতে প্রস্তুত সাবিনা, ‘যেহেতু ফাইনাল, যেকোনো কিছুই হতে পারে। আমার বিশ্বাস মেয়েরা খেলা থেকে হারাবে না। তারা এখন পরিণত। মারিয়া-মণিকাদের বয়স এখন আর ১৪-১৫ বছর নেই। তারা এখন বড় হয়েছে এবং বুঝতে পারে, খেলা ধরতে পারে। আমার মনে হয় কোনো চাপ মেয়েদের ভেতরে থাকবে না, তারা স্বাভাবিক খেলাটাই খেলবে।’
নেপালের বিপক্ষে আগের সাত দেখায় কোনো জয়ের ইতিহাস নেই বাংলাদেশের। তবে সেই পরিসংখ্যানকে পাত্তা দিচ্ছেন না বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। গ্রুপ পর্বে ভারতকে প্রথমবারের মতো হারানোর আত্মবিশ্বাস থেকে নেপালকেও ফাইনালে হারাতে চান ছোটন। তিনি বললেন, ‘এই টুর্নামেন্টের আগে ভারতের বিপক্ষেও আমরা কখনো জিতিনি। কিন্তু এবার মেয়েরা ওদের বিপক্ষে পুরো ৯০ মিনিট খেলার মধ্যেই ছিল এবং ভালো ব্যবধানে জিতেছে। কাল (আজ) আরেকটা ভিন্ন দিন, যেহেতু মেয়েরা ভালো ফুটবল খেলে ফাইনালে এসেছে, তারা সর্বোচ্চটা দিয়েই চেষ্টা করবে নতুন কিছু করার।’
৪ ম্যাচে ২০ গোল করা বাংলাদেশকে যোগ্য সম্মানই দিচ্ছেন নেপাল কোচ কুমার থাপা। লাল-সবুজের দলকে নিজেদের চেয়েও সেরা বলে মেনে নিয়েছেন নেপাল কোচ। বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠত্ব মেনে নিলেও শিরোপা জিততে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী তিনি, ‘আমরা অতীতে বিশ্বাস করি না। নিজেরা ইতিহাস গড়তে চাই। হয়তো বাংলাদেশের আগের দলটা ভালো ছিল, তবে এবারের দলটা সেরা। তাদের প্রতি আমাদের সম্মান আছে। তারা সুন্দর ফুটবল খেলছে, প্রাণশক্তিতে ভরপুর। চ্যাম্পিয়ন হয়ে তারাও ইতিহাস গড়তে চায়। বাংলাদেশ সেরা, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা প্রমাণ করতে চাই আমরা তাদের চেয়েও সেরা।’