গত বছর আলু চাষে লাভ হওয়ায় এবারও আলু চাষে নেমেছেন চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণের আলুচাষিরা। কিন্তু এবার আগাম আলুর দাম কম থাকায় লোকসানে পড়েছেন তাঁরা।
গত বছর আলুচাষিরা প্রতি কেজি আলু মাঠেই বিক্রি করেছিলেন ৩৫-৪০ টাকা দরে। এবার তা এক ধাক্কায় নেমে এসেছে ১০-১২ টাকায়। ফলে উৎপাদন খরচের সঙ্গে আলুর দামের ফারাক বিস্তর।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় ২৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০ হাজার ৫৪৫ হেক্টর চাষ চাষি। এর মধ্যে প্রায় আট হাজার হেক্টর জমিতে চাষিরা স্বল্পমেয়াদি আগাম আলু আবাদ করেছেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই সেসব আলু তুলতে শুরু করেছেন।
উপজেলার কয়েকজন আলুচাষির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিগত মৌসুমে তাঁরা খেত থেকেই প্রতি কেজি আগাম জাতের গ্যানুলা ও ডায়মন্ড আলু ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করেছেন। আর এ বছর তা ১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চাষিরা জানান, এক বিঘা জমিতে আগাম আলু উৎপাদন করতে সাধারণত ৩২-৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়। গড়ে এক বিঘায় ৭৫ মণ আলু উৎপাদন হয়। সে হিসাবে প্রতি কেজি আলুর উৎপাদন খরচ পড়ে ১২ টাকার মতো।
উপজেলার নাগদা গ্রামের আলুচাষি খলিলুর রহমান এবার চার বিঘা জমিতে আগাম আলু চাষ করেছিলেন। আলু আবাদে বীজ, সার, কীটনাশক, সেচ, হালচাষ, মজুরি মিলিয়ে তাঁর খরচ হয়েছে ১ লাখ ২৮ হাজার টাকা। তিনি খেত থেকে সেই আলু তুলেছেন।
হালিম খান বলেন, ‘আগাম আলুতে যেখানে খরচের দু-তিন গুণ লাভ থাকার কথা, এবার সেখানে লোকসান দিতে হয়েছে। সব মিলিয়ে এবার ৩১২ মণ আলু পেয়েছি। খেত থেকে ১০ টাকা দরে মোট ৯৯ হাজার ৮৪০ টাকার আলু বিক্রি করেছি।’
উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের কৃষক আকবর হোসেন বলেন, ‘আমি বরাবরই আগাম আলুর চাষ করে আসছি। আগাম আলু আবাদে খরচ বেশি হলেও বাজারদরে তা পুষিয়ে যায়। কিন্তু এবার লোকসান হয়ে গেল।’
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আবু হানিফ জানান, কৃষকেরা নতুন আলু তুলতে শুরু করেছেন। বাজারেও নতুন আলু ২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। উপজেলার কোনো কোনো জায়গায় বৃষ্টির কারণে বিলম্বে আলু রোপণ করা হয়েছে।