প্রধানমন্ত্রীর উপহার পেয়ে পাল্টে গেছে ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার একমাত্র নারী নরসুন্দর শেফালী রানী’র জীবন। এক যুগ ধরে তিনি উপজেলার শৌলজালিয়া ইউনিয়নের স্থানীয় দোগনা বাজারে সেলুনের কাজ করে ৫ সন্তানকে লেখাপড়া করাচ্ছেন। বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এলে তাঁকে ৪ শতাংশ জমিসহ একটি আধা পাকা বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়। এর আগে অন্যের জমিতে একটি ঝুপড়ি ঘরে সন্তানদের নিয়ে থাকতেন সংগ্রামী এই নারী।
জানা যায়, এক সময় শেফালী রানীর স্বামী সংসার সবই ছিল। স্বামী যাদব শীল নর সুন্দরের কাজ করতেন। তাই দিয়ে ভালোই চলতো তাদের সংসার। হঠাৎ ২০১২ সালে স্বামী যাদব শীল মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়ায় অন্যের জমিতে একটি ঝুপড়ি ঘরে ৪ মেয়ে ও ১ ছেলে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করেন শেফালী রানী। সন্তানদের মুখে খাবার তুলে দিতে কোনো উপায় না পেয়ে সংসারের হাল ধরেন শেফালী রানী নিজেই। জীবনযুদ্ধে হার না মানা নর সুন্দর শেফালী রানী অদম্য সাহস নিয়ে এক যুগ ধরে স্থানীয় দোগনা বাজারে রাস্তার পাশে অন্যের একটি ঘরের বারান্দায় নিজেই সেলুনের কাজ শুরু করেন। তাঁর উপার্জিত অর্থ দিয়েই শেফালী রানী ৪ মেয়ে ও ১ ছেলেকে বিভিন্ন স্কুল-কলেজে লেখাপড়া করান। তাঁর নিজস্ব কোনো জমি না থাকায় অন্যের জমিতে বাঁশের তৈরি একটি ঝুপড়ি ঘরে সন্তানদের নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন। ২০১৯ সালে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসলে তাঁকে বলতলা গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ৪ শতাংশ জমিসহ একটি সেমি পাকা বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়। আর এতেই পাল্টে যায় নারী নরসুন্দর শেফালী রানী’র জীবন। এরপর তিনি ঢাকা গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও দেখা করেন।
নর সুন্দর শেফালী রানী বলেন, ‘কখনো কল্পনাও করিনি সন্তানদের নিয়ে আমি পাকা বাড়িতে থাকতে পারব। প্রধানমন্ত্রী মা হয়ে আমাকে বাড়ি তৈরি করে দিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।’
কাঠালিয়া ইউএনও সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, ‘তাঁর (শেফালি) জীবিকা নির্বাহের জন্য স্থানীয় দোগনা বাজারে খুব শিগগিরই একটি দোকানঘর তৈরি করে দেওয়া হবে।’