হোম > ছাপা সংস্করণ

৬২০ হেক্টর গেল পুকুরে

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ফসলি জমিসহ যেখানে-সেখানে অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন করা হচ্ছে। এতে গত ১০ বছরে উপজেলায় ৬২০ হেক্টর ফসলি জমি কমে গেছে। পুকুর খননের মাটি খাল ও সেতুর মুখে ফেলায় ফসলের মাঠে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। এ ছাড়া পুকুর খননের কাদামাটি আঞ্চলিক ও মহাসড়কের ওপর দিয়ে নেওয়ায় সড়কের পিচ উঠে যাচ্ছে এবং কর্দমাক্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।

স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, কয়েক বছর ধরে ফসলি জমিতে পুকুর কাটার ফলে উপজেলার মাধবপুর, শ্রীকৃষ্টপুর, বোয়ালিয়া তাড়াশ, কোহিত, ঘরগ্রাম, মঙ্গলবাড়িয়াসহ নিচু এলাকায় হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়ছে। খাল, ব্রিজ ও পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে ফেলায় দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। আর পুকুর খনন করায় ফসলি জমির মাঠ থেকে বর্ষার পানি সময়মতো নামতে না পারায় গত বছর রবিশস্য আবাদ করতে পারেননি কৃষকেরা। এতে বিলম্বিত হচ্ছে ইরি-বোরোর আবাদ।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ থেকে ২০২২ সালের অক্টোবর মাস পর্যন্ত তাড়াশ উপজেলায় ৮৫০টি পুকুর খনন করা হয়েছে। এসব পুকুর খননের ফলে ৬২০ হেক্টর আবাদি জমি কমে গেছে। উপজেলার বিভিন্ন ভেকুমালিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরে এই উপজেলায় আরও শতাধিক পুকুর খনন করার কথা রয়েছে।

জানা গেছে, এলাকার কিছু অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ী কৃষকদের বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে তাঁদের আবাদি জমি বার্ষিক লিজ নিয়ে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করছেন। যেখানে কৃষকেরা ধান চাষে প্রতি বিঘা জমিতে বছরে চার থেকে ছয় হাজার টাকা লাভ করেন, সেখানে পুকুর কাটলে বছরে প্রতি বিঘায় ২০-২৫ হাজার টাকা বেশি পান। তাই বেশি মুনাফার আশায় কৃষকেরা অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছে জমি লিজ দিয়ে পুকুর খনন করছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার তালম ইউনিয়নের লাউতা গ্রামে কুন্দাশন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রশিদ তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন করছেন। গত বছর ওই জমিতে পুকুর কাটার দায়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. ওবায়দুল্লাহ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন আবদুর রশিদকে। সেই সঙ্গে পুকুর কাটা বন্ধও করে দেন। অথচ এই বছর আবার সেখানে পুকুর খনন করা হচ্ছে।

জমির মালিক আবদুর রশিদ বলেন, ফসলি জমিতে পুকুর খননের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি। প্রয়োজন হলে অনুমতি নেওয়া হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুকুর খননের ঠিকাদার বলেন, ‘সাংবাদিকেরা বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেন। আর আমরা বিভিন্ন দপ্তর ম্যানেজ করেই পুকুর খনন করি। তাই পুকুর খননে কোনো সমস্যা হয় নাই।’

পুকুর খননের বিষয়ে তালম ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা ফিরোজ মাহমুদ খান বলেন, পুকুর না কাটার জন্য স্কুলশিক্ষক আবদুর রশিদকে নিষেধ করা হলেও তিনি তা খনন করছেন। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন্নাহার লুনা বলেন, সরকারি অনুমতি ছাড়া জমির শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না। তিন ফসলি কৃষিজমিগুলো পরিণত করা হচ্ছে গভীর পুকুরে। এতে উপজেলায় আশঙ্কাজনক হারে কমছে কৃষিজমি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাউল করিম বলেন, পুকুর খনন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. মোবারক হোসেন বলেন, জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে জেলা প্রশাসকের অনুমতি লাগবে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ