সাভারের আশুলিয়ার ডিশ ব্যবসায়ী ইলিম সরকার হত্যা মামলায় আরও এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে সাইফুল ইসলাম ওরফে ইউসুফ (৩১) নামের ওই আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলা পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সালেহ ইমরান।
গ্রেপ্তার ইউসুফ আশুলিয়া থানার ইয়ারপুর গ্রামের আ. হকের ছেলে। তিনি পল্লী বিদ্যুতের ঠিকাদার। এর আগে এ মামলায় ইলিম সরকারের স্ত্রী কেমিলি ও তাঁর পরকীয়া প্রেমিক মো. রবিউল করিম পিন্টুকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে পিবিআই।
পিবিআই জানায়, নাটোরের গুরুদাসপুরের তেলটুপি গ্রামের পিন্টু আশুলিয়ায় পল্লী বিদ্যুতের লাইনম্যান হিসেবে চাকরি করতেন। ২০১৯ সালে তিনি ইলিম সরকারের বাড়িতে বিদ্যুতের মিটার লাগাতে যান। সেই থেকে পরিচয়ের পর ইলিমের স্ত্রী কেমিলির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে পিন্টুর।
পিবিআই আরও জানায়, পরকীয়ার বিষয়টি কেমিলির স্বামী টের পেলে তাঁদের মধ্যে দাম্পত্য কলহের সৃষ্টি হয়। এর জেরে কেমিলি ও পিন্টু ডিশ ব্যবসায়ী ইলিমকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ভাড়াটে খুনি দিয়ে হত্যার পরিকল্পনা করে ব্যর্থ হন। এরপর নিজেরাই হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরে চলতি বছরের ২৮ মার্চ রাতে খাবারের সঙ্গে ইলিমকে ঘুমের ওষুধ খাওয়ান কেমিলি। পরদিন পিন্টু ও ইউসুফ কুপিয়ে ইলিমকে হত্যা করে নিহতের বাসার সিসিটিভি ফুটেজের ডিভিআর মেশিন খুলে নিয়ে যান।
নিহত ইলিম সরকারের গলার নিচে একটি, পেটে ১১টি ও পিঠে ধারালো অস্ত্রের দাগ ছিল।
হত্যাকাণ্ডের পর স্বামীর হত্যার বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন কেমিলি। ডিশ ব্যবসাকে কেন্দ্র তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে বলে তখন দাবি করেছিলেন তিনি।
এদিকে, আশুলিয়ায় চাকরির সুবাদে পল্লী বিদ্যুতের ঠিকাদার ইউসুফের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি হয় পিন্টুর। বন্ধু পিন্টুর কথায় তাঁকে সহায়তা করতেই ইলিম হত্যায় অংশ নেন ইউসুফ। শুধু বন্ধুত্বের খাতিরেই তিনি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন। ইউসুফ ও পিন্টুর মধ্যে এ নিয়ে কোনো আর্থিক লেনদেন হয়নি।
এসআই সালেহ ইমরান বলেন, গ্রেপ্তারকৃত আসামি ইউসুফকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গ্রেপ্তার পিন্টু এবং কেমিলি হত্যাকাণ্ডে নিজেদের জড়িত থাকার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।