বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার মো. মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে উপকারভোগীর চাল আত্মসাৎ ও কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার তেলিগাতী ইউনিয়নের ডিলারের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ এনে উপকারভোগী মানসিক প্রতিবন্ধী শরিফা আক্তারের মামাতো ভাই মো. জাহাঙ্গীর হাওলাদার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করেছেন। অভিযোগের সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম।
জাহাঙ্গীর হাওলাদার বলেন, তাঁর ফুপাতো বোন শরিফা আক্তার একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। তাঁর দুটি সন্তান রয়েছে। প্রতি মাসে ১০ টাকা দরে ৩০ কেজি চালে তাঁর সন্তানদের খুব উপকার হতো। কিন্তু অক্টোবর মাসের চাল শরীফার স্বাক্ষর দিয়ে ডিলার মনিরুল ইসলাম তুলে নেন। তিনি এই অনিয়মের বিচার চান।
শরীফার ভাই আল আমিন শেখ বলেন, তাঁর বোনের চাল স্বাক্ষর জাল করে ডিলার তুলে নিয়েছেন। প্রতিবন্ধী বোনের জন্য সরকারের এই সহযোগিতা নিয়মিত রাখার দাবি জানান তিনি।
অন্যদিকে ৩০ কেজির মূল্যে ২৭ কেজি চাল দেওয়ার অভিযোগ করেছেন কয়েকজন উপকারভোগী। আনছার খান নামের এক ব্যক্তি বলেন, ৩০০ টাকায় ৩০ কেজি চাল দেওয়ার কথা থাকলেও প্রতিবারেই তাঁদের ২৭ কেজি চাল দেওয়া হয়। চাল কম দেওয়ার বিষয়টি ডিলারকে জানালে কার্ড কেটে দেওয়ার হুমকি দেয়।
আনছার খান বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। এমন হলে আমরা কোথায় যাব?’
তেলিগাতী বাজার এলাকার আসাদ শেখ নামের এক ব্যক্তি বলেন, প্রায়ই শুনেন ১০ টাকা কেজির চালে কম দেওয়া হয়। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে তার সাথে খারাপ ব্যবহার করেন ডিলার মনিরুল ইসলাম।
অভিযোগের বিষয়ে মনিরুল ইসলাম বলেন, তিনি কাউকে চাল কম দেননি। শরীফা আক্তার একজন মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় সে ফিঙ্গারিং করতে পারেন না। তাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তাঁর সুলভ মূল্য কার্ড আরেকজন দরিদ্র মানুষকে দিতে বলেছেন। সেই কারণে দুই মাস ধরে শরীফা চাল পাচ্ছেন না। এর আগে শরীফা নিয়মিত চাল পেয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ডিলার মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে কয়েকটি অভিযোগ পেয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে শুনানির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. আব্দুল হাকিম বলেন, কোনো ডিলার কাউকে চাল কম দিতে পারবে না। একজনের চাল অন্যজন কোনোভাবেই তুলতে পারবে না। এটা স্পষ্ট অন্যায়। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।