ইরাকি প্রধানমন্ত্রী মোস্তফা আল-কাদিমির বাস ভবন লক্ষ্য করে গতকাল রোববার তিনটি ড্রোন (মানুষশূন্য বিমান) হামলা চালানো হয়েছে। বিস্ফোরকবাহী তিনটি ড্রোনের দুটি আঘাত হানার আগেই ঠেকানো সম্ভব হলেও একটি প্রধানমন্ত্রীর বাস ভবনে আঘাত হেনেছে। তবে আল-কাদিমি সুস্থ রয়েছেন। দেশবাসীকে ‘শান্ত থাকতে এবং সংযম দেখাতে’ আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ইরাকি সংবাদ সংস্থা আইএনএকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানায়, তিনটি ড্রোনের মধ্যে দুটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার আগেই মাটিতে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। বাকিটি প্রধানমন্ত্রীর বাস ভবনে আঘাত হেনেছে। ছয় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য আহত হলেও প্রধানমন্ত্রী সুস্থ রয়েছেন।
‘গ্রিন জোন’ হিসেবে পরিচিত রাজধানী বাগদাদের অঞ্চলটিতে হামলার পর নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনার পর ভার্চুয়ালি দেশের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাদিমির বৈঠক করার খবর পাওয়া গেছে। তবে বৈঠকের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
গ্রিন জোনে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ছাড়া সরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভবন এবং বিভিন্ন দেশের দূতাবাস রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি।
যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে গত ১০ অক্টোবরের জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে সহিংসতা বেড়েছে। গত শুক্রবার বাগদাদে সরকারি বাহিনী ও ইরানের সহায়তাপুষ্ট রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত একজন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনা খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন আল-কাদিমি, যা সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে জনসমর্থন হারানো বিরোধীদের আরও কোণঠাসা করতে পারে।
গতকালের ড্রোন হামলার নিন্দা জানিয়ে প্রেসিডেন্ট বারহাম সালিহ বলেন, ‘ইরাকে আবার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুযোগ দেওয়া হবে না। সংবিধানের বিরুদ্ধে যেকোনো ধরনের অভ্যুত্থান রুখে দেওয়া হবে।’
বিদেশি শক্তি ইরাকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন শিয়া ধর্মাবলম্বী প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ মোকতাদা আল-সদর।
হামলার নিন্দা জানিয়ে তদন্তে সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
গত ১০ অক্টোবরের নির্বাচনে মোকতাদা আল-সদরের নেতৃত্বাধীন জোট জিতে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। আল-সদরের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক ভালো হলেও অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ইরানের হস্তক্ষেপের বিরোধী তিনি।