হোম > ছাপা সংস্করণ

আড়াই দশকে যত আর্থিক পুরস্কার

রানা আব্বাস ও সাহিদ রহমান অরিন ঢাকা

নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের পর রাজকীয় অভ্যর্থনা, ফুলেল শুভেচ্ছা আর মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হচ্ছেন সাবিনারা। শিরোপাজয়ী মেয়েদের অনুপ্রাণিত করা হচ্ছে আর্থিক পুরস্কার দিয়েও। সাবিনা-কৃষ্ণাদের অভিভাবক সংস্থা বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) এখনো পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা না দিলেও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) দিচ্ছে ৫০ লাখ টাকা। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন নিজেই এই ঘোষণা দিয়েছেন।

বিচ্ছিন্নভাবেও এসেছে আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে অবশ্য যেকোনো বড় অর্জনে সরকার থেকে শুরু করে ক্রীড়া সংস্থাগুলো আর্থিক পুরস্কার ঘোষণা করে। ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফি জয়ের পর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বিশাল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ লাখ টাকার চেক তুলে দিয়েছিলেন ক্রিকেটারদের হাতে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপের সাফল্যে ক্রিকেট দল, ২০০৩ সাফজয়ী ফুটবল দল, ২০১৫ বিশ্বকাপে ভালো করা ক্রিকেট দল—এমন আরও অনেক সাফল্যে সরকারের পক্ষ থেকে আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হয়েছে খেলোয়াড়দের। অর্থের পাশাপাশি খেলোয়াড়দের ঢাকায় জমি পাওয়ার ঘটনাও আছে। এসব পুরস্কারে খেলোয়াড়েরা অনুপ্রাণিত যেমন হয়েছেন, আবার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ‘উপহার’ বুঝে না পাওয়ার ক্ষোভও আছে অনেকের মনে। গত ২৫ বছরে ক্রীড়াঙ্গনে বড় বড় সাফল্যের পর পাওয়া আর্থিক পুরস্কার নিয়েই এই বিশেষ আয়োজন।

পুরস্কার দেওয়ায় বিসিবি এগিয়ে

১৯৯৭ আইসিসি ট্রফিজয়ী দল ও ১৯৯৯ বিশ্বকাপের পর বিসিবির পক্ষ থেকে আর্থিক পুরস্কার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও বাস্তবে তা দেখা যায়নি বলেই দাবি একাধিক খেলোয়াড়ের। তাঁদের কাছেই জানা গেল, ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফি জেতার পর বিসিবি খেলোয়াড়দের দিয়েছিল একটি করে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র (এসি)। সময়ের সঙ্গে ছবিটা বদলেছে। সেই বিসিবি এখন দেশের ক্রীড়া সংস্থাগুলোর মধ্যে আর্থিক পুরস্কার প্রদানে সবচেয়ে এগিয়ে। গত এক দশকে আর্থিকভাবে নিজেদের শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যাওয়ায় বিসিবি এখন নিয়মিত অন্য ক্রীড়া সংস্থাকে আর্থিক অনুদান তো দিচ্ছেই, খেলোয়াড়দেরও বিশেষ পুরস্কার দিয়ে থাকে। এবার যেমন নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপজয়ী দলকে দিয়েছে। বাংলাদেশ পুরুষ দল শক্তিশালী প্রতিপক্ষের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ জিতলেও কোটি টাকার বোনাস ঘোষণা করা হয়। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী আজকের পত্রিকা বললেন, ‘সাফজয়ী খেলোয়াড়দের আর্থিক প্রণোদনা বা পুরস্কার বিশেষভাবে অনুপ্রাণিত করবে। দ্রুত একটা আর্থিক পুরস্কার দিলে তাঁদের অর্জন বা ভবিষ্যৎ পথচলায় একটু অবদান রাখা যাবে। শুধু ক্রিকেট-ফুটবল নয়; আমরা স্পোর্টিং নেশন হিসেবে এগিয়ে যেতে চাই। আর আর্থিক পুরস্কারে আসলে কাজও হয়।’

আছে ক্ষোভ, অতৃপ্তি

যেকোনো বড় সাফল্যে চার দিক থেকে শুভেচ্ছা, ভালোবাসা আর আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা আসে। একাধিক খেলোয়াড় ক্ষোভ নিয়ে জানালেন, সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া চেক ছাড়া প্রতিশ্রুতির অনেক কিছুই পাননি তাঁরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ১৯৯৭ আইসিসি ট্রফিজয়ী ও ১৯৯৯ বিশ্বকাপ দলের দুজন সদস্য গতকাল যেমন বলছিলেন, ‘আইসিসি ট্রফি আর বিশ্বকাপে ভালো করার পর অনেক প্রতিশ্রুতিই শুনেছিলাম। আমাদের দলের বেশির ভাগ সদস্যেরই ঢাকায় স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা ছিল না। আমরা শুনেছিলাম, জমি কিংবা প্লট দেওয়া হতে পারে। বিচ্ছিন্নভাবে আমাদের দলের দু-একজন পেলেও বেশির ভাগই তা পায়নি।’ ২০০৩ সাফজয়ী দলকে সরকারের পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা আর  পূর্বাচলে ৫ কাঠা জমি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। ওই দলের সদস্য রোকনুজ্জামান কাঞ্চন জানালেন, জমি বুঝে নিতে তিন কিস্তিতে তাঁদের অর্থ পরিশোধ করতে হয়েছিল। কাঞ্চনের চাওয়া সাবিনাদের ক্ষেত্রে এমন কিছু না হোক, ‘একজন সাফজয়ী ফুটবলার হিসেবে আমার চাওয়া মেয়েদের যেন সরকারের পক্ষ থেকে ফ্ল্যাট অথবা নগদ টাকা উপহার দেওয়া হয়। সাফজয়ী মেয়েদের পরিবারের দায়িত্বও যেন নেয় সরকার।’

ফুটবল

১৯৯৯ কাঠমান্ডু সাফ গেমস 
সোনাজয়ী ফুটবল দলের প্রত্যেক খেলোয়াড়কে ৩ লাখ টাকার চেক দেয় সরকার। দুর্দান্ত খেলা ফুটবলাররা পান বাড়তি ১ লাখ করে।

২০০৩ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ
সরকারের পক্ষ থেকে ৫ লাখ টাকা এবং পূর্বাচলে ৫ কাঠা জমি সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়। তবে জমি নিতে তিন কিস্তিতে অর্থ পরিশোধ করতে হয়েছে ফুটবলারদের।

২০২২ নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ
এখন পর্যন্ত আড়াই কোটি টাকা (সেনাবাহিনী ১ কোটি, বিসিবি ৫০ লাখ, সালাম মুর্শেদীর এনভয় ৫০ লাখ, আতাউরের তমা গ্রুপ ৫০ লাখ)। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর আরও আর্থিক পুরস্কারের ঘোষণা আসতে পারে।

ক্রিকেট

১৯৯৭ আইসিসি ট্রফি
সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক খেলোয়াড়কে ৫ লাখ টাকার চেক।

১৯৯৯ বিশ্বকাপ
সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেক খেলোয়াড়কে  ৩ লাখ টাকার চেক।

মেয়েদের ২০১৮ এশিয়া কাপ 
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলকে ২ কোটি টাকা অর্থ পুরস্কার  বিসিবির।

২০২০ যুব বিশ্বকাপ জয়
আকবরদের প্রতি মাসে ১ লাখ টাকা করে বেতন, ২৪ মাসে ২৪ লাখ। খেলোয়াড়দের জীবন ও স্বাস্থ্যবিমা করিয়ে দিয়েছে বিসিবি।

২০১৫ ওয়ানডে বিশ্বকাপ 
কোয়ার্টার ফাইনাল ও তিন সিরিজ জয় সরকারের পক্ষে দলকে ২ কোটি টাকা দেওয়া হয়। সরকার ও বিসিবি মিলিয়ে ক্রিকেটাররা পারফরম্যান্স অনুযায়ী ন্যূনতম ৫ লাখ, সর্বোচ্চ ৪৫ লাখ টাকা পেয়েছিলেন।

২০১৭ অস্ট্রেলিয়া সিরিজ 
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথমবার টেস্ট জয়ের পর বিসিবি ২ কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করে। 

২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি
সেমিফাইনালে ওঠায় বাংলাদেশ দলকে ২ কোটি টাকা বোনাস।

আর্চারি

দক্ষিণ এশিয়ান (এসএ) গেমসে অভূতপূর্ব সাফল্য পায় বাংলাদেশ আর্চারি দল। ১০ ইভেন্টের সব কটিতে জেতে সোনা। রোমান একাই সোনা জেতেন তিনটি। বাংলাদেশ অলিম্পিক কমিটির (বিওএ) পক্ষ থেকে তাঁকে দেওয়া হয় ১১ লাখ টাকা।

অন্যান্য

দক্ষিণ এশিয়ান (এসএ) গেমসে স্বর্ণজয়ী সাঁতারু মাহফুজা খাতুন শিলা, ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার সীমান্ত ও শুটার শাকিল আহমেদকে অ্যাপার্টমেন্ট উপহার দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ