পীরগঞ্জে তীব্র শীতের মধ্যে বৃষ্টিতে জলাবদ্ধ খেতের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফসল রক্ষায় উপজেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদের বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে পীরগঞ্জে প্রায় ২৬ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ হচ্ছে। অপরদিকে রবিশস্য হিসেবে ৫ হাজার ২৫০ হেক্টরে আলু, ৩২০ হেক্টরে গমসহ কলা, পেঁয়াজ, সরিষার আবাদ হয়েছে।
গত শুক্রবারের বৃষ্টিতে রবি ফসলের ক্ষতি হলেও বোরো ধানের জমি তৈরিতে অনেক উপকার হবে বলে আশা কৃষি বিভাগের। কর্মকর্তারা জানান, পানির অভাবে এখনো পীরগঞ্জে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের চারা রোপণ করা সম্ভব হয়নি।
কৃষি বিভাগ জানায়, আলু ও গমের জমিতে পানি জমে থাকায় ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। কৃষকেরা জমিতে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনে কাজ করে যাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার পানি ও শীত-কুয়াশা থেকে ফসল রক্ষায় যে সব পরামর্শ দিয়েছেন তার মধ্যে আছে- সকালে গমের পাতায় জমে থাকা পানি রশি টেনে ফেলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা এবং বিকেলে টেবুকোনাজল ও ট্রাইফ্লক্সিস্ট্রবিন অথবা ডাইফেনাকোনাজল ও এ জেক্সোস্ট্রোবিন গ্রুপের ছত্রাকনাশক ছিটানো।
মসুর, মটর, খেসারিসহ ডাল জাতীয় ফসলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়া এবং ইপ্রিডিয়ন গ্রুপের ছত্রাকনাশক প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে। আর আলুর জমি থেকে দ্রুত পানি বের করে দেওয়া এবং ম্যানকোজেব ও মেটালিক্সিল গ্রুপের ছত্রাকনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তবে বোরো ধানের জমিতে পানি ধরে রাখা এবং আমের গাছে ম্যানকোজেব অথবা টেবুকোনাজল ও ট্রাইফ্লক্সিস্ট্রবিন গ্রুপের ছত্রাকনাশক ছিটাতে বলা হয়েছে। সরিষার জমি থেকে পানি বের করে দেওয়ার পাশাপাশি টেবুকোনাজল ও ট্রাইফ্লক্সিস্ট্রবিন গ্রুপের ছত্রাকনাশক ব্যবহার এবং ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসলের জমি থেকে পানি বের করে দিতে বলা হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাদেকুজ্জামান সরকার বলেন, ‘সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে রবি ফসলের ক্ষতি হলেও চলতি ইরি-বোরো ধানের জমি তৈরিতে কৃষকেরা খুবই উপকৃত হচ্ছেন। কারণ, এখন পর্যন্ত ৫০ ভাগ জমিতে চারা রোপণ হয়েছে। আমরা কৃষকের পাশে থেকে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছি।’
কৃষি কর্মকর্তা জানান, যেকোনো পরামর্শের জন্য উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় অথবা নিকটস্থ কৃষি ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নেওয়ার জন্য কৃষকদের আহ্বান জানানো হয়েছে।