নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মোহাম্মদনগর-উদরাজপুর সংযোগ সড়কটি পাকা না হওয়ায় ভোগান্তি বাড়ছে। বর্ষা মৌসুমে এই কাঁচা সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে পাঁচ গ্রামের ছয় হাজারের বেশি মানুষকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। খানাখন্দে ভরা সড়কটি দুর্দশা বাড়িয়েছে তাঁদের। এই ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর উদ্যোগ প্রত্যাশা করছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদনগর-উদরাজপুর সংযোগ সড়কটি এক কিলোমিটার দীর্ঘ। এখান দিয়ে মোহাম্মদনগর, উদরাজপুর, চরপার্বতী, ফেনী জেলার আলীপুর ও দেবরামপুরের মানুষেরা যাতায়াত করছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দীর্ঘদিন ধরেই কাঁচা। ফলে বর্ষায় কাদা মাটিতে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তখন এই সড়কে চলাচলকারী মানুষের ভোগান্তির অন্ত থাকে না।
এলাকাবাসী জানান, মোহাম্মদনগর-উদরাজপুর সংযোগ সড়ক দিয়ে পূর্ব দিক থেকে উদরাজপুর, চরপার্বতী, আলীপুর ও দেবরামপুরের একাংশের মানুষ ও মানিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মৌলভি সামছুল হক দাখিল মাদ্রাসায় পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা চলাচল করে। অপরদিকে মোহাম্মদনগর-দেবারামপুর সড়ক থেকে পূর্বদিকে মোহাম্মদনগর ও দেবারামপুরের একাংশের সাধারণ মানুষ, স্কুল ও মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা চলাচল করে। কাঁচা থাকার কারণে বর্ষা মৌসুমে কাদা আর খানাখন্দে ভরা রাস্তায় চলাচলে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হয় সকলকে। বাধ্য হয়ে প্রয়োজনের তাগিদে অনেককে ২-৩ কিলোমিটার পথ ঘুরে বিকল্প সড়কে চলাচল করতে হয়। এর ফলে নষ্ট হয় মূল্যবান সময়, খরচ হয় বাড়তি টাকা। সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় এই ভোগান্তি চরমে উঠেছে।
অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মোহেব উল্যা অভিযোগ করে বলেন, এই এক কিলোমিটার ছাড়া মোহাম্মদনগর-উদরাজপুর গ্রামের সকল সড়কই পাকা। কিন্তু এই এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সংযোগ সড়কটি কাঁচা হওয়ায় বাকি পাকা রাস্তার সুফলও তাঁরা পাচ্ছেন না। এতে করে শিক্ষার্থীদের স্কুল-মাদ্রাসায় যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এমনকি এই সড়কের জন্য সামাজিক আচার অনুষ্ঠানে যেতেও সমস্যায় পড়তে হয়।
মোহাম্মদনগরের বাসিন্দা মানিকপুর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজীব হোসেন জানান, এই কাঁচা সড়কটির কারণে দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া দিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আনা নেওয়া করতে হয়। এমনকি একটু রাত হলে এই সড়কে কোনো যানবাহন আসতে চায় না। বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া গুনতে হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিরাজপুর ১,২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য জহুরা হাসনীন আশা বলেন, ‘এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবরে তিনি আবেদন করেছি। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি বিলম্ব না করে পাকা করার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।’
সিরাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরনবী চৌধুরী জানান সিরাজপুরে হাতেগোনা কয়েকটি রাস্তা কাঁচা আছে। এগুলোর তালিকা স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন বলেন, জনগুরুত্বের কথা বিবেচনা করে পরবর্তী বার্ষিক প্রকল্পে এই সড়কটি অন্তর্ভুক্ত করা হবে।