স্ত্রী রাজিয়া ও শারমিন সুলতানা (সাদিকা) নামের দুই বছরের এক কন্যা সন্তান রেখে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলেন সিদ্দিকুর রহমান। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান পায়নি পরিবার। এরপর পার হয়েছে ২৯ বছর। এত বছর পর অবশেষে বাড়ি ফিরে এসেছেন সিদ্দিকুর রহমান। তিনি একা নন, সঙ্গে এনেছেন দুই ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী ও শাশুড়ি। এখন সিদ্দিকুর রহমানের বয়স ৬৫ বছর।
এমন ঘটনা ঘটেছে ভালুকা উপজেলার রাজৈ ইউনিয়নের খুর্দ গ্রামে। এ খবর পেয়ে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা তাঁকে দেখতে আসছেন।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, খুর্দ গ্রামের মাওলানা আলাউদ্দিনের পাঁচ ছেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে ষষ্ঠ সিদ্দিকুর রহমান। ১৯৯২ সালে নিরুদ্দেশ হয়ে যান তিনি। অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও তাঁকে পায়নি পরিবার। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ ২৯ বছর। সিদ্দিকুর এই দীর্ঘ সময় পার করেন সিলেটের সুনামগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায়। সেখানে দ্বিতীয় বিয়ে করে সংসার পাতেন। অবশেষে জন্মস্থানের টানে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে গত ২১ মার্চ খুর্দ গ্রামে ফিরে আসেন তিনি।
সিদ্দিকের প্রথম স্ত্রী রাজিয়া জানান, গফরগাঁও যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন তিনি। আর বাড়ি ফিরে আসেননি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, ‘২৯ বছর পর বাড়িতে চলে আসায় আমি অনেক খুশি। আমি যাঁর আশায় আর কোনো সংসার করিনি, তিনি ফিরে আসায় আমার সংসার পূর্ণ হয়েছে।’
সিদ্দিকের ছোট ভাই মিজানুর রহমান ফরাজি বলেন, ‘আমার ভাইকে দীর্ঘদিন পর ফিরে পেয়ে মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি।’
সিদ্দিকের ভাতিজা দুলু ফরাজী বলেন, ‘চাচাকে ফিরে পেয়ে অনেক ভালো লাগছে। আমরা তাঁকে বাকিটা সময় আমাদের কাছেই রাখতে চাই।’
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমি মাঝে মাঝে অনেক কিছু ভুলে যাই। কী কারণে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলাম, তা মনে নেই। তবে আমার ভাই-বোনদের কথা মনে পড়ায় আমি চলে এসেছি। আমি আমার বাড়িতেই থাকব, আর কোথাও যাব না।’
রাজৈ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাদশা বলেন, ‘সিদ্দিকুর রহমান ১৯৯২ সালে হারিয়ে যান। ২৯ বছর খোঁজাখুঁজির পর তাঁর পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, তিনি সিলেটের সুনামগঞ্জে দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে বসবাস করছেন। পরে সেখান থেকে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।’