কোনো ধরনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে শেষ হয়েছে নরসিংদী চেম্বার অব কমার্সের (এনসিসিআই) বার্ষিক সাধারণ সভা। গত শনিবার দুপুরে মাধবদীর স্থানীয় একটি রিসোর্টে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে নরসিংদী চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট আলী হোসেন শিশির নিয়ম অনুযায়ী তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন বোর্ড ও আপিল বোর্ড গঠনের জন্য নরসিংদীর জেলা প্রশাসকে চিঠি দেন। পরে আগামী ১৫ অক্টোবর নরসিংদী চেম্বার অব কমার্সের সাধারণ নির্বাচনের জন্য তারিখ নির্ধারণ করা হলেও তা স্থগিত করা হয়। সাধারণ সভার আয়োজন না করা, সঠিক সময় না থাকাসহ নানা অনিয়ম থাকায় ২৪ আগস্ট নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাচন বোর্ড ও আপিল বোর্ড গঠনের অফিস আদেশ বাতিল করেন জেলা প্রশাসক আবু নইম মোহাম্মদ মারুফ খান।
এদিকে দফায় দফায় কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধি, টানা দু-বছর সাধারণ সভা না করা ও সদস্যদের হিসাব বিবরণী না পাঠানোসহ নানা অনিয়মের কারণে সভায় সদস্যদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। তাদের অভিযোগ, সংগঠনটির নিয়ম অনুযায়ী (সঙ্ঘবিধির ৩৭ ধারায়) বার্ষিক সাধারণ সভা করার ১৪ দিন আগে রেজিস্ট্রি ডাকে সদস্যদের কাছে হিসাব বিবরণী পাঠানোসহ সাধারণ সভা ডাকতে হয়। বর্তমান কমিটি তা না করে সাত দিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পোস্টে আমন্ত্রণ জানিয়ে ২৭ আগস্ট সাধারণ সভা ডাকে। এতে সংগঠনটির বেশির ভাগ সদস্য অংশ নিতে পারেননি। এ ছাড়া বার্ষিক সাধারণ সভা না করে দফায় দফায় কমিটির মেয়াদ বৃদ্ধি করে দু-বছরের কমিটি সাড়ে তিন বছর ধরে দায়িত্ব পালন করে। পরে একটি রিসোর্টে পিকনিকের আয়োজন করে ২০১৯-২০ সালের এক সঙ্গে বার্ষিক সাধারণ সভা করার দাবি করে এই কমিটি। নিয়ম অনুযায়ী, একই সঙ্গে দু-বছরের বার্ষিক সাধারণ সভা করার বিধান এই ব্যবসায়ী কমিটির নেই। সদস্যদের পক্ষ থেকে বার্ষিক সাধারণ সভা করার জন্য বারবার চিঠি দেওয়া হলেও নরসিংদী চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট সে বিষয়ে কর্ণপাত না করে সংগঠনের কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে নরসিংদী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের বর্তমান প্রেসিডেন্ট বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবেই সব করা হয়েছে। সবাইকে চিঠি দিয়েই সভা করা হয়েছে। কেউ চিঠি পেয়েছে কি না সেটা আমার দেখার বিষয় নয়। করোনার কারণে দু-বছরের সাধারণ সভা এক সঙ্গে করা হয়েছিল। যারা নির্বাচন চান না তারাই এসব মিথ্যা অভিযোগ করছেন।
নরসিংদী চেম্বার অব কমার্সের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শফিকুল ইসলাম শেখ তুলু আজকের পত্রিকাকে বলেন, এনসিসিআইয়ের গত ৩ বছরের কোনো এজিএম নিয়ম মেনে করা হয়নি। সে ক্ষেত্রে আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়ে অস্বচ্ছতা ও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তারা গঠনতন্ত্রের কোনো ধারাকে তোয়াক্কা করছেন না।