হোম > ছাপা সংস্করণ

৬৭০ বেকারের ভাগ্য বদল

তাজরুল ইসলাম, পীরগাছা

কাজ করতেন পোশাক কারখানায়। কিন্তু অভাব পিছু ছাড়ছিল না। শেষে সাহস করে ঢাকা ছেড়ে ফিরে আসেন পীরগাছার বাড়িতে। প্রশিক্ষণ নেন গবাদিপশু পালন, প্রাথমিক চিকিৎসা ও কৃষি বিষয়ে। সেটাই বদলে দিল তাঁর ভাগ্যের চাকা।

বলছিলাম উপজেলার সুন্দর গ্রামের সফল আত্মকর্মী মাসুদ রানার কথা। নিজের ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে এখন তিনি অন্যের ভাগ্য বদলে ব্যস্ত। তাঁর পথ ধরেই হাঁটছেন আশপাশের আরও ৬৭০ উদ্যোক্তা। আর তাঁর নিজের খামারে এখন কাজ করে পরিবারের খোরাক জোগাচ্ছেন ১০ জন। এভাবেই জিরো থেকে আজ তিনি হিরো বনে গেছেন।

মাসুদ যুব উন্নয়নের প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন নিজেই প্রশিক্ষক। উপজেলা যুব উন্নয়ন অফিসের হয়ে ব্যাচ ভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেন বেকার যুবদের। তিনি ২০০৬ সালে পোশাকশ্রমিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও বর্তমানে হয়েছেন সফল খামার মালিক।

মাসুদ জানান, ২০০৬ সালে এসএসসি পাস করার পর সময় ভালো যাচ্ছিল না তাঁর। অভাবের কারণে চলে যান ঢাকায়। কাজ নেন সোয়েটার কারখানায়। সেখানে চার বছর চাকরির পাশাপাশি চালিয়ে যান লেখাপড়া। এ সময় অবস্থার উন্নয়নে নানা চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খেলেও অভাব পিছু ছাড়ছিল না। তবুও মনোবল ভেঙে যায়নি। ভালো কিছু করার প্রত্যয় বাড়তে থাকে মনে।

হঠাৎ ২০১০ সালে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেখে চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে আসেন মাসুদ। রংপুর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে গবাদিপশু পালন, প্রাথমিক চিকিৎসা ও কৃষি বিষয়ে তিন মাসের প্রশিক্ষণ নেন তিনি। এরপর শুরু হয় নতুন পথচলা। বাইসাইকেলে করে ঘুরে ঘুরে মাঠ পর্যায়ে শুরু করেন প্রাণী চিকিৎসাসেবা। এরপর তাঁকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এ পেশায় বেশ সাড়া পাওয়ায় ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে কর্মপরিকল্পনা। মেধা ও পরিকল্পনায় একে একে যুক্ত হতে থাকেন পশু পালনসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে।

পল্লি প্রাণী চিকিৎসক থেকে এই যুবক হয়ে ওঠেন সফল আত্মকর্মী প্রশিক্ষক। তিনি উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিসম্পদ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এলটিআই গাইবান্ধা থেকে সিএলপি (সার্টিফিকেট ইন লাইভস্টক অ্যান্ড পোলট্রি) এবং লাল তীর লাইভস্টক ডেভেলপমেন্ট বিডি লিমিটেড থেকে এআইএসপি (কৃত্রিম প্রজনন সেবাদানকারী) প্রশিক্ষণ নেন।

এরপর রাজস্ব খাতের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচিত হন মাসুদ। পীরগাছা উপজেলার বেকার যুবদের মধ্যে প্রায় আড়াই হাজার জন তাঁর কাছে প্রশিক্ষণ নেন। তাঁদের মধ্যে ৬৭০ জন সফল আত্মকর্মী তাঁর পরামর্শে উপজেলায় ডেইরি ও পোলট্রি খামার গড়ে তোলেন। অন্যদিকে বর্তমানে মাসুদের ছয় একর জমিতে ঘাস, খামারে ২০টি গরুসহ বিভিন্ন প্রকল্প চালু আছে। এসব প্রকল্পে ১০ জন সার্বক্ষণিক কাজ করছেন।

মাসুদ বলেন, ‘আমার এ অর্জনে সবচেয়ে বড় অবদান আছে মা ও সহধর্মিণীর। তাঁদের প্রচেষ্টায় আমি এত দূর এগিয়ে আসতে পেরেছি। সেই সঙ্গে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাদের কথা ভোলার নয়। তাঁদের অনুপ্রেরণায় আমার জীবনে এত বড় সাফল্য এসেছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ কায়সার আলী বলেন, ‘মাসুদ রানা বেকার যুব ও যুব নারীদের আইকন। শত কষ্টেও যে সাফল্য পাওয়া যায় মাসুদ তার প্রমাণ। তাঁর মেধাকে কাজে লাগাতে আমরা তাঁকে প্রশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছি। আমরা চাই বেকার যুবরা তাঁর মতো আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠুক।’

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ