জেলা জজ রাশিদা সুলতানা, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব খান, সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এঁদের নিয়োগ দিয়েছেন। এই কমিশনের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ পাওয়ার পর প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় গণমাধ্যমের কাছে বলেছেন, ‘ভোটারদের ভোটমুখী করাই নতুন কমিশনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।’ ভোটের প্রতি মানুষ যে কিছুটা বিমুখ হয়েছে, সেটা এই বক্তব্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে। মানুষের এই ভোটবিমুখতার নিশ্চয়ই কারণ আছে। সেই কারণগুলো দূর করে মানুষকে ভোটমুখী করার কাজে নির্বাচন কমিশনের সফলতা আমরা কামনা করছি।
একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠান খুব সহজ কাজ নয়। আগে একাধিক নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে অসফল হয়ে সমালোচিত হয়েছে। বিতর্কিত হয়ে মেয়াদকালের আগেই একটি নির্বাচন কমিশনের বিদায়ের ঘটনাও আমরা স্মরণ করতে পারি। তাই নিষ্ঠা, সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে নতুন নির্বাচন কমিশন পাঁচ বছরের মেয়াদকাল পূর্ণ করবে, এটাও আমাদের প্রত্যাশা।
নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তবে নির্বাচন কমিশনের একক চেষ্টায় দেশে অবাধ ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা সম্ভব হয় না। সরকার, প্রশাসন, রাজনৈতিক দল, ভোটারসহ সব অংশীজনের আন্তরিকতাই একটি ভালো নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারে। এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা সরকারের। তবে এটাও বলতে হবে, নির্বাচনের পরে ফলাফল না একটা সংস্কৃতি আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
একটি নির্বাচনের প্রাথমিক শর্ত সব দলের অংশগ্রহণ এবং ভোটারদের শঙ্কামুক্ত ও বাধাহীন ভোটাধিকার। আমাদের দেশে সাম্প্রতিক সময়ে খুব কম নির্বাচন বিতর্কের বাইরে থেকেছে। সম্প্রতি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বা বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়ার একটি খারাপ প্রবণতা তৈরি হয়েছে। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যেকোনো মূল্যে জেতার সহিংস পথ। আর নির্বাচনে লাগামহীন অর্থব্যয়ের সঙ্গে এই সহিংসতা, গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থা বিরাট প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে।
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘আমরা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলব, তাদের সহায়তা কামনা করব। তারা কি প্রত্যাশা করেন, আমরা কতটুকু প্রত্যাশা পূরণ করতে পারব এটা আলোচনা হবে। আমি আশা করি বিএনপিও আসবে।’ আমরা তাঁর কথায় আস্থা রাখতে চাই। তিনি তাঁর পূর্বসূরিদের দেখেছেন। এবং সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবেন, সবাই এটা প্রত্যাশা করেন।
তবে নির্বাচন কমিশনের জন্য পরীক্ষা হলো ভোট। আর এই পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ হলেই দেশের মানুষ তাদের ওপর আস্থা পাবে। সে জন্য নতুন নির্বাচন কমিশনকে তাদের কাজের মধ্য দিয়েই মানুষের মন জয় করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।