সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সর্বত্রই গাছে গাছে আমের মুকুলে ছেয়ে গেছে। মুকুলের ম-ম গন্ধে ভরে উঠেছে চারপাশ। গ্রামগঞ্জে আমগাছে মুকুলের হলদে রং ধারণ করে প্রকৃতি সেজেছে এক অপরূপ সাজে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ডিসেম্বরের শেষ থেকে মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত আমগাছে মুকুল আসা শুরু হয়। এ সময়ে মুকুলের প্রধান শত্রু কুয়াশা। এ বছর তেমন কুয়াশা না থাকায় আমের মুকুল সম্পূর্ণ প্রস্ফুটিত হওয়ার সম্ভাবনা শতভাগ। কিছু গাছের মুকুলে পাথরের মতো দানা দেখা গেলেও এতে ক্ষতির কিছু নেই।
বর্তমানে উপজেলার সর্বত্রই দেশি আমের পাশাপাশি লাগানো হয়েছে ফজলি, সুরমা ফজলি, ল্যাংড়া, ক্ষীরশাপাতি, আম্রপালি, গোপাল ভোগ, কলম কাটা হাইব্রিডসহ উন্নত জাতের আমগাছ। রাস্তার ধারে, পুকুর পাড়েও রোপণ করা হয়েছে এ জাতীয় আমগাছের চারা। গাছে মুকুল আসার পর হোপার পোকার আক্রমণ থেকে মুকুল রক্ষার জন্য কেরাটা ও ছত্রাকনাশক হিসেবে কীটনাশক পরিমাণমতো ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের।
এ ছাড়া আমের মুকুল আসার পর গাছে অ্যানথ্রাকনোজ রোগ হয়। আর আমের গুটি মটরদানার মতো হওয়ার পর দুবার কীটনাশক ছিটাতে অনেককে পরামর্শ দেওয়া হয়।
দেখা গেছে, উপজেলার গ্রামে-গ্রামে, রাস্তার ধারে, বাড়ির আশপাশে, ভিটেমাটি এবং বাগানগুলো আমের মুকুলে ছেয়ে আছে গাছের শাখা-প্রশাখা। চারদিকে ছড়াচ্ছে ঘ্রাণ। শোনা যাচ্ছে মৌমাছির গুনগুন শব্দ। বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ বছর আমের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন স্থানীয় কৃষকেরা।
উপজেলার নাদোসৈয়দপুর গ্রামের কৃষক আক্কাস আলী, খয়বর হোসেন, মো. নাসির উদ্দিনসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, বাড়ির আশপাশে উন্নত বিভিন্ন জাতের শতাধিক আমগাছ লাগিয়েছেন তাঁরা। ইতিমধ্যে এসব গাছে মুকুল আসা শুরু হয়েছে। গাছে পুরো মুকুল ফুটতে আরও কয়েক দিন লাগবে। মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় মুকুলে ভরে গেছে গাছ। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার আমের বেশ ভালো ফলন পাওয়ার আশা করেন তাঁরা।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, এ বছর আবহাওয়া বেশ অনুকূল থাকায় গাছে গাছে আমের ব্যাপক মুকুল এসেছে। সঠিকভাবে কীটনাশক প্রয়োগ ও পরিচর্যা করলে কৃষকেরা আমের ভালো ফলন পাবেন। এ সময় যেসব গাছের মুকুলে ছত্রাক আক্রমণ করেছে, তাতে ছত্রাকনাশক ছিটানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের।