হোম > ছাপা সংস্করণ

তালা-সংস্কৃতি

সম্পাদকীয়

কল্পনা করে দেখুন, আপনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। কল্পনা করুন, সেই প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগের কোনো না কোনো উপদলের সদস্য আপনি। ব্যস! এবার নাকে তেল দিয়ে  ঘুমান। কারণ পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এখন আপনার হাতের মুঠোয়। আপনার কাছে পড়াশোনা বা বিদ্যা কতটা পৌঁছাল, তা খুব জরুরি নয়। আপনি তালা মেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম বন্ধ করতে কতটা পারঙ্গম, সেটাই হয়ে উঠতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়জীবনে আপনার ‘সেরা’ কীর্তি!

ইতিহাস বলছে, আমাদের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধিকার আন্দোলনে ছাত্রলীগের ছিল যথার্থই বিরোচিত ভূমিকা। রাজপথের আন্দোলন থেকে শুরু করে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির নানা কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে সংগঠনটি হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ছাত্রসংগঠন। কিন্তু সেই গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে ছাত্রলীগের বর্তমান সদস্যরা কতটা জানেন এবং মানেন, সেই প্রশ্নের উত্তর এড়ানো যাবে না।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ যে গ্রুপে গ্রুপে ভাগ হয়ে পড়েছে, তাতেই বোঝা যায়, এরা কেউ কারও কথা শোনে না। প্রত্যেকেই নিজ উপদলের আধিপত্য কায়েমের জন্য অনেকটা সময় ব্যয় করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা যায় শিক্ষা গ্রহণ করতে, শিক্ষায়তনে রাজনীতি কোনো কারণেই শিক্ষার্থীর জীবনে শিক্ষার চেয়ে মূল্যবান হয়ে উঠতে পারে না। দেশের স্বার্থে কখনো কখনো জাতীয় রাজনীতিতেও ছাত্ররা বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। কিন্তু বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সদস্যরা যা ঘটাচ্ছেন, তাকে না বলা যায় রাজনীতি, না বলা যায় শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টির সংগ্রাম। তাঁরা স্রেফ প্রমাণ করার চেষ্টায় আছেন, কোন উপদল কোন উপদলের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। ব্যস! এটাই বুঝি তাঁদের মূল পরিচয় হতে চলেছে।

ইচ্ছে হলেই গেটে তালা দেওয়ার যে ‘রেওয়াজ’ চালু হয়েছে, তা শিক্ষাজীবনে কোনো ‘স্বাস্থ্যকর’ ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেয় না। ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই ‘তালা শিল্প’র কাছে বন্দী হয়ে যে ভোগান্তি পোহান, তাতে ছাত্রলীগের উপদলগুলোর কিছু আসে-যায় না। প্রশাসনও যেন এতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। তালা লাগানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসনের কাউকে অকুস্থলে দেখা যায় না। আর এ ধরনের অরাজকতার বিরুদ্ধে এক বছরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে, এমন উদাহরণও নেই।
তাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এখন পরিণত হয়েছে ছাত্রলীগের উপদলগুলোর ইচ্ছাপূরণ কেন্দ্রে। তারা চাইলে গেটে ঝুলবে তালা, না চাইলে হয়তো ক্লাস পর্যন্ত পৌঁছাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম।

কীভাবে একটি ছাত্রসংগঠন এ রকম ‘যথেচ্ছাচার’-এ লিপ্ত হতে পারে? যদি রাজনৈতিকভাবে সংগঠনের ওপরমহলের নির্দেশ থোড়াই কেয়ার করার মতো মানসিকতা গড়ে ওঠে, তাহলেই কেবল তা সম্ভব। এত উপদল যেখানে অস্তিত্বশীল, সেখানে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ প্রায় অসম্ভব।

দরপত্রবিষয়ক হুমকি-ধমকিসহ নানা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত আছে ছাত্রলীগের উপদলগুলো, হলগুলোয় তাদের আধিপত্যের সংগ্রাম। এই অবস্থার নিরসন হতে পারে কেন্দ্রীয়ভাবে এদের নিয়ন্ত্রণ করা হলে এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়ালে। এই দুটো ব্যাপারের অভাব যত দিন থাকবে, তত দিন এই ‘তালা-সংস্কৃতি’ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টি বের হতে পারবে না।

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেষ সাক্ষীর জেরা চলছে

ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ পাওয়ার আশায় সাগরে জেলেরা

ভারতের নিষেধাজ্ঞা: স্থলবন্দর থেকে ফেরত আসছে রপ্তানি পণ্য

নিলামে গৌতম বুদ্ধের রত্নসম্ভার

যুক্তরাষ্ট্র-চীনের সমালোচনা জাতিসংঘের উদ্বেগ

ভারতের হামলা, পাকিস্তানের প্রস্তুতি

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ