ডলারের দাম বাড়ায় বিদেশে পড়ালেখা ও গবেষণারত শিক্ষার্থীদের ব্যয় বেড়েছে। আর ডলারের সংকটের কারণে অনেক শিক্ষার্থী সময়মতো টিউশন ফি পরিশোধ করতে পারছেন না। এতে কিছু শিক্ষার্থীর কোর্স সম্পন্ন করা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে যাঁরা অনলাইনে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন, তাঁরা সনদপ্রাপ্তির বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন।
কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার ছাড়ে কড়াকড়ি করছে। এতে বিদেশে শিক্ষারত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পাশাপাশি ডলারের সংকটে নতুন করে ভর্তি হবে এমন শিক্ষার্থীদের কাগজপত্রের অগ্রগতিও একপ্রকার থমকে গেছে। তাঁদের জন্য বিশেষ উদ্যোগও নেই সরকারের। আর বাংলাদেশ ব্যাংকে অভিযোগ করলেও ব্যাংকগুলো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
আবিদা সুলতানা মীম নামে এক শিক্ষার্থী জানান, তিনি ভর্তি, টিউশন ফিসহ শিক্ষার যাবতীয় খরচ একটি ব্যাংকের মাধ্যমে পাঠান। কিন্তু ওই ব্যাংক ডলার নেই অজুহাত দেখিয়ে ফি পরিশোধ করছে না। এতে কোর্স সম্পন্ন করা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এমনকি কোর্স শেষ না করলে সনদও পাওয়া যাবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘নিয়মিত শিক্ষার্থীর পাশাপাশি চাকরিজীবীদের অনেকে উচ্চতর শিক্ষার জন্য বাইরে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ দেশে থেকে অনলাইনে বসে কোর্স করছেন। ডলারে তাঁদের পাওনা পরিশোধ করতে হয়। ডলার না থাকলে সমস্যা তো হবে। তবে এসব সমস্যা শিগগির কেটে যাবে।’
ঋতু আকতার নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘সুইফট সিস্টেমের বাইরে বাংলাদেশ থেকে সরাসরি ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মাধ্যমে ব্যাংক এশিয়া ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক থেকে বিদেশে অর্থ পাঠানো যায়। ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি থাকায় দ্রুত ও সহজে অর্থ পৌঁছে যায়। আগের নিয়মেই পাওনা পরিশোধ করছি। কিন্তু বাড়তি দামে ডলার কেনায় খরচ অনেক বেড়ে গেছে।’
রবিন নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ভর্তিসংক্রান্ত উপযুক্ত প্রমাণ নিয়ে ব্যাংক যাবতীয় দায়িত্ব নেয়। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফিসহ অন্যান্য খরচ বহন করা ব্যাংকগুলোর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এই ডলার নিয়ে সরকার উদ্যোগ না নিলে অনেক শিক্ষার্থী সনদ পাবেন না।’
মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব সেখ হেলাল উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডলারের সংকট দূর হচ্ছে না। পাশাপাশি বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের কাছ থেকে আমরাও খোলাবাজারে তেমন একটা ডলার পাচ্ছি না। এ কারণে ব্যাংকের বাইরে শিক্ষার্থীদের ডলার পাওয়াটা কঠিন।’
ডলার সংকটের বিষয়ে বাফেদা চেয়ারম্যান ও সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম বলেন, ‘দেশে ডলারের ঘাটতি রয়েছে। কিন্তু আমাদের কোনো নিত্যপণ্যের আমদানি বিল পরিশোধে বিলম্ব হচ্ছে না। তবে শিক্ষার্থীদের ডলার সংকটের পড়ালেখা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এমন অভিযোগ নেই।’