কাশফুল গাছের বাণিজ্যিক চাষ করে বাৎসরিক বেশ ভালো অর্থ উপার্জন করছেন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক সাখাওয়াত হোসেন। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও এই কাজটিই করেছেন তিনি। কাশফুলের গাছ থেকে ছন বা ঝাঁটি বানিয়ে পানের বরজের মালিকদের কাছে বিক্রি করে সচ্ছলতা অর্জন করেছেন এই কৃষক।
সাখাওয়াত হোসেন জানান, তাঁর বাবার মুখে শুনেছেন অনেক আগে তাঁদের জমিতে অন্যান্য ফসলের মধ্যে আগাছা হিসেবে গজিয়ে উঠত এ গাছ। এর মূল মাটির অনেক গভীরে চলে যাওয়ায় কোদাল দিয়ে উপড়ে দিলেও কিছুদিন পরে আবার গজিয়ে উঠত। একপর্যায়ে দমনে ব্যর্থ হয়ে অন্য ফসলের চাষ বন্ধ করে দেন তাঁর বাবা। তখন থেকেই জমিটিতে শুধু কাশ গাছের চাষ হচ্ছে। যা থেকে প্রতিবছর বেশ পয়সা পাচ্ছেন সাখাওয়াত। তিনি আরও জানান, কাশ গাছ চাষে তেমন কোনো খরচ নেই। শুধু বর্ষা মৌসুমে গাছের চারা গজানোর পর ফসফেটের সঙ্গে কিছু পটাশ মিশিয়ে ছিটিয়ে দিলেই হয়। জমিতে পানি জমলে তা দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হয়। এরপর শীত মৌসুমে কেটে ভালোভাবে শুকিয়ে রাখতে হয়। পরে খেত থেকেই বরজ মালিকেরা কিনে নিয়ে যান। প্রায় ৩০ বছর ধরে ১ একর ৫ শতক জমিতে কাশের চাষ করছেন তিনি। গত বছরও কাশগাছ ও খড় বিক্রি করে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা পেয়েছিলেন।
পান চাষিরা জানান, কাশ গাছের খড় দিয়ে পানের বরজে ছাউনি দেওয়া হয়। পান গাছের শলার সঙ্গে বেঁধে পান গাছকে ওপরে তুলতে সাহায্য করে। সহজে নষ্ট হয় না বলে বরজের খড় হিসেবে ব্যবহার করা হয় কাশ গাছের খড়। দিন যত যাচ্ছে পানের বরজও তত বাড়ছে। ফলে কাশ গাছের খড়ের চাহিদা ও দামও বাড়ছে।