পর্তুগাল আজ বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করছে ঘানা ম্যাচ দিয়ে। ১৯৬৬ বিশ্বকাপে ইউসিবিওরা কিংবা ২০০৬ বিশ্বকাপে লুইস ফিগোরা যা পারেননি, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কাঁধে এবার সেই চ্যালেঞ্জ। এই বিশ্বকাপে সবচেয়ে ভারসাম্যপূর্ণ দলগুলোর একটি পর্তুগাল। দলকে নিয়ে শিরোপার স্বপ্ন দেখতেই পারেন কোচ ফার্নান্দো সান্তোস।
দলে যখন রোনালদোর মতো একজন যুবরাজের উপস্থিতি, তখন পর্তুগালের পক্ষে একটু বেশি জোরে আওয়াজ তোলাই স্বাভাবিক। আর লিওনেল মেসির মতো সিআর সেভেনেরও শেষ বিশ্বকাপ এটি। শেষটা রাঙাতে নিজের সবটাই উজাড় করে দিতে চাইবেন রোনালদো, তা কি আর বলতে?
প্রত্যাশা পূরণে রোনালদোর দিকেও আগ্রহভরে তাকিয়ে থাকবে পুরো পর্তুগাল। যখন বিশ্ব মঞ্চ কাঁপানোর সময় হয়ে এসেছে, তখনই আরেক বিতর্ক ঘিরে ধরেছে সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলারকে। পর্তুগাল যখন অষ্টমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে নামছে, তখন অধিনায়ক রোনালদো আছেন বিতর্কের কেন্দ্রে। গত সপ্তাহে ব্রডকাস্টার পিয়ার্স মরগানকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে নিয়ে বিস্ফোরক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। ইউনাইটেড গত পরশু এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সমঝোতার ভিত্তিতে রোনালদোর সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে তারা। তাঁকে নিয়ে সর্বশেষ খবর, প্রিমিয়ার লিগে এভারটনের বিপক্ষে প্রতিবন্ধী কিশোরের সঙ্গে বাজে আচরণের অভিযোগে ইংলিশ ফুটবলে দুই ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। এই নিষেধাজ্ঞা
ইংলিশ ফুটবলের যেকোনো ম্যাচে কার্যকর হবে।
সাম্প্রতিক সময়ে সিআর সেভেনের ফর্মও ভালো যাচ্ছে না। চলতি মৌসুমে ইউনাইটেডের হয়ে ১৬ ম্যাচে মাত্র ৩ গোল করেছেন। পর্তুগালের জার্সিতে গত ৯ ম্যাচে করেছেন ২ গোল। তবু আন্তর্জাতিক ফুটবলে সবচেয়ে বেশি ১১৭ গোল করা রোনালদোকে নিয়ে আলাদা করেই ছক করবেন ঘানার কোচ অটো আদো। তবে রোনালদো দাবি করছেন, তিনি বিতর্ককে পাত্তা দিচ্ছেন না।
বিশ্বকাপে খেলার জন্য পুরোপুরি মানসিকভাবে প্রস্তুত এবং শারীরিকভাবে ফিট রয়েছেন।
গত কিছুদিনের বিতর্ক দল এবং রোনালদোকে প্রভাবিত করবে না মনে করছেন পর্তুগিজ সেন্টার ব্যাক রুবেন দিয়াসও। ম্যানসিটি তারকা বলেছেন, ‘আমার এ বিষয়ে (রোনালদোর) খুব বেশি কিছু বলার নেই। দল যে লক্ষ্য নিয়ে এসেছে এবং যা অর্জন করতে চাইছে, আমি মনে করি না যে ক্রিস্টিয়ানোর ব্যাপারগুলো সেখানে কোনো বাধা তৈরি করছে। দল হিসেবে আমরা এখন বিশ্বকাপে মনোযোগী হব, অন্য কোনো ইস্যু নিয়ে নয়। আমরা ঘানার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ জিততে উন্মুখ হয়ে আছি।’
এই শক্তিশালী দলটিই কিনা সরাসরি বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব উতরাতে পারেনি। আন্তমহাদেশীয় প্লে-অফ খেলে কাতার বিশ্বকাপের টিকিট পায় পর্তুগাল। অন্যদিকে ঘানা বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে ৮ ম্যাচের মধ্যে ৭টিতে জিতে গ্রুপের শীর্ষে থেকে অ্যাফকন অঞ্চল থেকে টিকিট কাটে ‘ব্লাক স্টার্স’।
তবে সব ছাপিয়ে আলোচনায় রোনালদো। বিশ্বকাপের মধ্যেই ক্লাববিতর্ক। আগামী জানুয়ারিতে ক্লাব ফুটবলের শীতকালীন দলবদলে পর্তুগিজ তারকা নিশ্চিতভাবেই থাকছেন আলোচনার কেন্দ্রে।
ইউনাইটেডের সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ইউরোপের সেরা পাঁচ লিগ থেকে বিদায় নেওয়ার শঙ্কায় আছেন তিনি। রোনালদোর পরের গন্তব্য কোথায়, সেটি জানতে তাই একটু অপেক্ষাই করতে হচ্ছে।
আপাতত তাঁর বিশ্বকাপ অভিযানেই চোখ রাখা যাক।