গত কয়েক বছর হলুদ চাষে লোকসানের মুখে পড়েন পুঠিয়ার চাষিরা। তবে চলতি বছরের শুরু থেকে বাজারে হলুদের ব্যাপক চাহিদার সঙ্গে দামও ভালো থাকায় খুশি তাঁরা।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় প্রায় ৩৫০ হেক্টর জমিতে হলুদ চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ হেক্টর কম। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন হলুদ।
গত কয়েক দিনে উপজেলার সর্ববৃহৎ বানেশ্বর ও ঝলমলিয়া হাট ঘুরে দেখা গেছে, এ বছর বাজারে বিগত দিনের তুলনায় অনেক কম হলুদ আসছে। তবে বাজারে হলুদের দাম ভালো থাকায় চাষিরা সন্তোষ প্রকাশ করছেন। হাটে প্রতিমণ হলুদ প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
গত বৃহস্পতিবার ঝলমলিয়া হাটে আসা হলুদ বিক্রেতা আলী হোসেন বলেন, ‘বিগত দিনে উঁচু ভিটে জমিতে আখ চাষ হতো। কিন্তু নানা কারণে সে জমিতে আর আখ চাষ হয় না। বর্তমানে বেশির ভাগ উঁচু জমিতে হলুদের আবাদ হয়। রোগ বালাই কম হওয়ায় এলাকার অনেকেই হলুদের আবাদ শুরু করেছেন।’
মিজানুর রহমান নামে একজন বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে হলুদ চাষ করতে ১৬-১৭ হাজার টাকা খরচ হয়। যাঁরা জমি লিজ নেন তাঁদের আরও ১০-১২ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ হয়।’
তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে চাষিরা অনেক লোকসানে হলুদ বিক্রি করেছেন। অবশ্য এ বছর উৎপাদন কম থাকায় বাজারে হলুদের ব্যাপক চাহিদা দেখা যাচ্ছে। দামও অনেক ভালো।’
নাটোর জংলি এলাকার হলুদ ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘গত কয়েক বছর বাজারে হলুদের চাহিদা কম ছিল। এতে চাষিরা দাম অনেক কম পেয়েছেন। চলতি বছর ভালো চাহিদা ও দামে লাভবান হবেন চাষিরা।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামসুনাহার ভূঁইয়া বলেন, ‘এ বছর এলাকায় সঠিক পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ কারণে কৃষকেরা হলুদের ভালো ফলন পাচ্ছেন। মসলা তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলোও এবার ব্যাপক পরিমাণে হলুদ কিনেছে। এতে স্থানীয় কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন। ভবিষ্যতে হলুদ চাষে জমির পরিমাণ আরও বাড়বে।’