কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় আয়োজিত লালন স্মরণোৎসব ও সাধুসঙ্গ শেষ হবে আজ শুক্রবার। লালনের আখড়াবাড়িতে সাধুসঙ্গে যোগ দেওয়া সাধু-ফকিরদের আশা, এখানে এসে যে লালন দর্শন তাঁরা অর্জন করেছেন তা তাঁদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে সাহায্য করবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার লালনের আখড়াবাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, সাধারণ মানুষের ঢল নেমেছে। সেই সঙ্গে আসরে মজে ওঠেন বাউল-ফকির ও ভক্তরা। দীর্ঘদিন পরে তীর্থস্থান আসতে পারায় মহা খুশি লালন ভক্ত ও অনুসারীরা। একতারা, দোতারা আর ঢোল বাঁশির সুরে মেতে উঠেছে পুরো এলাকা। দেশ-বিদেশ থেকে আসা লালন ভক্ত, বাউল, ফকির ও অনুসারীরা আখড়াবাড়িতে অবস্থান নিয়ে লালনের অহিংস জাতপাতহীন মানব-মুক্তির বাণী প্রচার করে চলেছেন।
লালন গবেষক ফকির নহির শাহ বলেন, ‘জীবের শিক্ষার জন্য সাঁইজি লালন নিজেই এই উৎসব করতেন। মেলা ও অন্যান্য অনুষ্ঠান বাড়তি যোগ হলেও সাধুদের মূল অনুষ্ঠান সাধুসঙ্গ লালনের রীতিতেই হয়। পূর্ণিমার তিথিতে অধিবাস হবে। তারপর বাল্য সেবা ও পূর্ণ সেবা শেষ করে তারা সাঁইজির ধাম ছেড়ে যাবেন।
নওগাঁ থেকে আসা লালন অনুসারী ফজলুল হক বলেন, ‘আমি দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে এখানে আসি। গত দুই বছর করোনার কারণে আসতে পারিনি। এবার এসে খুবই ভালো লাগছে। তবে মেলা আগে শুরু হওয়ার কারণে এখনো সাধু-গুরুরা আসেননি। তবে আশা করছি সাধুদের অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার আগেই সবাই চলে আসবেন।’
মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা জাহিদ হোসেন বলেন, ‘কমিটির সিদ্ধান্তক্রমে দোল পূর্ণিমার আগেই মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তবে আমরা যথারীতি সাধুদের নিয়মে বৃহস্পতিবার রাতে অধিবাস, শুক্রবার সকালে বাল্যসেবা ও দুপুরে পুণ্য সেবার মধ্য দিয়ে শেষ করব মূল আয়োজন।’
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই স্মরণোৎসবের উদ্বোধন হলেও লালনের রীতি অনুযায়ী গতকাল সন্ধ্যায় অধিবাসের মধ্য দিয়ে সাধুসঙ্গের শুরু হয়েছে এবং আজ ভোরে বাল্যসেবা এবং সকালে পূণ্য সেবার মধ্য দিয়ে শেষ হবে সাধুসঙ্গ। এরপর আখড়াবাড়ি ছাড়বেন সাধু-ভক্তরা।