নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ধর্ষণের শিকার কিশোরীর পরিবারকে গ্রামছাড়া এবং স্বজনদের বাড়িঘরে লুটপাটের ঘটনায় উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই কিশোরীর মা বন্দর থানায় এই মামলা করেন।
মামলার আসামিরা হলেন মুছাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন, আমিনুল শেখ (৪০), আলমগীর (২৫), তাঁর ভাই আল আমিন (২৮), বাবা শুকুর আলী (৪৮), মা নাসিমা, আসলাম (২২) জিয়াদ (৪৫), শরিফ (১৯), আরিফ (২৫), রনি (২১), অনিক (২৩), সুমন (২৫), নিলুফা (৪০) আবু তাহের (৪১) ও শামীম (৪০)।
মামলার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত শবে বরাতের রাতে ওই কিশোরীকে আলমগীর ও তাঁর ফুফাতো ভাই রকি মিলে ধর্ষণ করে। এই ঘটনায় তাঁদের দুজনকে আসামি করে বন্দর থানায় মামলা হয়। মামলার দুই দিন পর আসামি রকি ওই কিশোরীর পরিবারের সদস্যদের ধাওয়ায় পালাতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন। পরে তিনি হাসপাতালে মারা যান। এই ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।
পুলিশ জানায়, ওই মামলার পর ধর্ষণ মামলার আসামি আলমগীর ও তাঁর পরিবার চেয়ারম্যানকে ম্যানেজ করে। পরে ইউপি চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেন ও তাঁর ছেলে শুভ হুমকি-ধমকি দিয়ে ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবারকে বাড়িছাড়া করে। এ ছাড়া তাঁদের স্বজনদের পাঁচটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট করে।
এই বিষয়ে ধর্ষণের শিকার কিশোরীর পরিবারের পক্ষে এক আইনজীবী নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলমের আদালতে একটি পিটিশন মামলার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জবানবন্দি নিয়ে সেই অভিযোগটি থানায় এফআইআর হিসেবে গণ্য করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বন্দর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন আদালত।
কিশোরীর পক্ষের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খোকন বলেন, ধর্ষণ মামলার দ্বিতীয় আসামি রকি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। অপমৃত্যুর ঘটনাকে হত্যা মামলা রূপ দিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার ও হয়রানিমূলক আচরণ করা হয়েছে। সেই মামলা ঘিরে স্থানীয় চেয়ারম্যান ধর্ষণের শিকার কিশোরীর পরিবারকে গ্রামছাড়া করেছে। তাঁর স্বজনদের বাড়িতে লুটপাট চালিয়েছে।
মামলার বিষয়ে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, আদালতের নির্দেশে এ ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে।