দিন কিংবা রাত, উদ্দেশ্য ফাঁকা অটোরিকশা আর নির্জন রাস্তা। অটোরিকশাতে ওঠা কিংবা নির্জন রাস্তায় চলাচলকারী পথচারীদের আগে থেকেই নজরদারিতে রাখে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এই চক্রের সংকেত পেলেই অটোরিকশার যাত্রী সেজে উঠে বসেন একজন বোরকা পরিহিত নারী। কিছু দূর এগোনোর পর ধারালো চাকু বের করে যাত্রীর পেটে ঠেকিয়ে মুহূর্তের মধ্যেই কেড়ে নেওয়া হয় টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার।
এ ভাবেই দিনের পর দিন মানুষের থেকে নগদ টাকাসহ সর্বস্ব ছিনতাই করেছেন বলে পুলিশকে জানায় মামুন আলী। গত বুধবার দিবাগত রাতে ছিনতাইয়ের প্রস্তুতির সময় বনবেলঘড়িয়া পশ্চিম বাইপাস এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় ছিনতাইয়ের কাজে ব্যবহৃত একটি ধারালো চাকু ও রডের পাইপ উদ্ধার করা হয়। তবে ছিনতাইয়ের কাজে সাহায্যকারী রনি হোসেন (৩৮) নামের এক যুবক পুলিশের উপস্থিতিতে টের পেয়ে পালিয়ে যায়।
গ্রেপ্তার মামুন আলী (৪২) বনবেলঘরিয়া বাইপাস এলাকার বাসিন্দা। তাঁর বিরুদ্ধে নাটোর সদর থানায় ছিনতাই ও চুরির চারটি মামলা রয়েছে। ছিনতাইয়ে সহায়তাকারী রনি একডালা বাবুর পুকুরপাড় এলাকার বাসিন্দা। গ্রেপ্তারের সময় রনির ফেলে যাওয়া একটি মোটরসাইকেল জব্দ করে পুলিশ।
এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নাটোর সদর থানার সহকারী উপপরিদর্শক মো. সাখাওয়াত হোসেন বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে মামলা করেছেন। তিনি বলেন, গত বুধবার রাত ২টার সময় তাঁর নেতৃত্বে পুলিশের একটি টহল দল নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কের মহিলা কলেজ গেইট এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ সময় কলেজের সামনে নির্জন রাস্তায় বোরকা পরিহিত এক নারীসহ মোটরসাইকেল আরোহীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কাছে যান। তাঁরা কোথায় যাবেন জানতে চাইলে পুলিশকে দেখে মোটরসাইকেলচালক পালিয়ে যান। তখন ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তাঁর কণ্ঠস্বর শুনে পুলিশের সন্দেহ হয়। তখন বোরকার মুখ খুলতে বললে তিনি তর্ক শুরু করেন। হঠাৎ পায়ের জুতা দেখে পুলিশ বুঝতে পারে তিনি নারী নন পুরুষ। তখন পুলিশ বোরকার মুখ খুলে দেখেন বোরকা পড়ে আছেন একজন পুরুষ। এ সময় তাঁর শরীর তল্লাশি করে একটি ধারালো চাকু ও রডের পাইপ উদ্ধার করা হয়।
সদর থানার ওসি নাসিম আহমেদ বলেন, মামুনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।