বাংলাদেশে আশ্রিত মিয়ানমারের নাগরিক রোহিঙ্গাদের জন্য চলতি বছর দাতাদেশ ও সংস্থাগুলো ৮৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার অনুদান দেবে বলেছিল। বছরের প্রায় আট মাস চলে গেল; কিন্তু যে অনুদান মিলেছে, তা দাতাদের মোট প্রতিশ্রুতির মাত্র এক-তৃতীয়াংশ।
এতে রোহিঙ্গাদের খাবার ও ওষুধে টান পড়েছে। তাঁদের চাহিদা মেটাতে দ্রুত প্রতিশ্রুত তহবিল দিতে গতকাল সোমবার তাগিদ দিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।
এইচআরডব্লিউ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়াসহ সব দাতাদেশের উচিত দ্রুত রোহিঙ্গাদের জন্য প্রতিশ্রুত তহবিলের জোগান দেওয়া।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, রোহিঙ্গা ও তাদের আশ্রয়শিবিরগুলোর আশপাশের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য এ বছর পাওয়া গেছে মাত্র ২৬ কোটি ডলার। দাতাদের প্রতিশ্রুত এখনো সাড়ে ৬১ কোটি ডলার পায়নি বিশ্ব সংস্থা।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২৬ কোটি ডলারের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র দিয়েছে প্রায় ১০ কোটি ডলার, যা মোট প্রাপ্ত তহবিলের প্রায় ৩৫ শতাংশ। আর ইউরোপীয় কমিশন দিয়েছে চার কোটি ডলারের কিছু কম, অস্ট্রেলিয়া তিন কোটি ডলারের কিছু বেশি, জাপান দুই কোটি ডলারের কম এবং যুক্তরাজ্য ও কানাডার প্রত্যেকে এক কোটি ডলারের কম।
এইচআরডব্লিউ বলেছে, ২০১৭ সালের আগস্টে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর থেকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বিবৃতি দেওয়া ছাড়া কিছুই করেনি। মিয়ানমারের পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানো এবং দেশটির সামরিক জান্তার নেতাদের এবং তাঁদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য এইচআরডব্লিউ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
এইচআরডব্লিউ বলেছে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয়শিবিরগুলোয় সশস্ত্র অপরাধী গোষ্ঠীগুলোর তৎপরতা বেড়েছে। এতে রোহিঙ্গাদের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে ব্যর্থ হচ্ছে।
এইচআরডব্লিউ রোহিঙ্গাদের পড়ালেখা ও দক্ষতা বাড়ানোর প্রশিক্ষণসহ কর্মমুখী বিভিন্ন কার্যক্রম জোরদার করা এবং তাঁদের চলাফেরার স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য দাতাদেশ ও সংস্থাগুলোর প্রতি আবেদন জানিয়েছে।