ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে ভোলা, মাদারীপুর ও ঝালকাঠিতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সঙ্গে দমকা বাতাস বইতে শুরু করেছে। মাদারীপুরে পদ্মা, ঝালকাঠিতে নদনদী শান্ত থাকলেও ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী উত্তাল হয়ে উঠেছে। এতে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
তবে, ভোলার কোথাও বেড়িবাঁধের কোনো সমস্যা হয়নি বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড ভোলা ডিভিশন-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় অশনি আগামী বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সুপার সাইক্লোন হয়ে উপকূলে আঘাত হানার কথা রয়েছে। তাই উপকূলীয় জেলাগুলোতে দুই নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঘূর্ণিঝড় অশনির গতকাল সোমবার থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার থেকে বাড়তে পারে। উপকূলবর্তী জেলাগুলোতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। এ বিষয়ে ভোলা জেলা রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি ও ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ সোমবার বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে আজ মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। দুর্যোগকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের স্বেচ্ছাসেবকেরা প্রস্তুত রয়েছেন। অফিস সার্বক্ষণিক খোলা থাকছে।’
এ দিকে ভোলা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির নেতা মো. ফারুক বলেন, ‘সমুদ্র উত্তাল হওয়ায় অধিকাংশ মাছ ধরা ট্রলার ঘাটে ফিরেছে। কেউ কেউ সমুদ্রতীরের ছোট খালগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। যারা এখনো ঘূর্ণিঝড়ের সংকেত পাননি, তাঁদের নিরাপদে তীরে আনার চেষ্টা চলছে।’
শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি জানান, গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে দশটা থেকে মাদারীপুরের শিবচরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টির সঙ্গে মাঝেমধ্যে হালকা বাতাস বইতে থাকে। তবে তীব্র বাতাস না থাকায় বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌপথে নৌযান চলাচল স্বাভাবিক আছে বলে ঘাট সূত্রে জানা গেছে। সকাল থেকে লঞ্চ ও স্পিডবোটে ঢাকামুখী যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। বাংলাবাজার ফেরিঘাটে যানবাহনের দীর্ঘ সারি লক্ষ্য করা গেছে।
বিআইডব্লিউটিএর বাংলাবাজার লঞ্চঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. আক্তার হোসেন জানান, পদ্মা এখনো স্বাভাবিক রয়েছে। ফলে লঞ্চ, স্পিডবোট ও ফেরি চলাচল করছে। তবে আবহাওয়া আরও বৈরী হলে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হবে।
কাঠালিয়া (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি জানান, ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে গতকাল সোমবার সকাল ৯টার পর থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।
এ দিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব শুরু হলেও লঞ্চ চলাচল করছে বলে জানান কাঠালিয়া লঞ্চঘাটের ইজারাদার মো. তুহিন সিকদার। তিনি বলেন, ‘নদী স্বাভাবিক রয়েছে। ফলে লঞ্চ চলাচল করছে। বন্ধের নির্দেশনা পাইনি। পেলে বন্ধ করা হবে।’