আশুলিয়ার খেজুরটেক এলাকার বাসিন্দা মোশারফ হোসেন। শতভাগ দেশীয় প্রযুক্তিতে উদ্ভাবন করেছেন মশকনিধন যন্ত্র। যার নাম রেখেছেন বিডি ফগার মেশিন। এ যন্ত্রে ব্যবহৃত রাসায়নিক মানুষের শরীরে কোনো বিরূপ প্রভাব ফেলবে না বলে আশা প্রকাশ করেছেন সাভারে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) গবেষকেরা। এ নিয়ে তাঁরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ফগার মেশিনে ব্যবহৃত রাসায়নিকের প্রভাব নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছেন গবির গবেষকেরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য বিজ্ঞান অনুষদের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি, ফার্মেসি এবং মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের গবেষকেরা যৌথভাবে এ গবেষণা চালান।
গবির ফার্মেসি বিভাগের প্রধান ড. নিলয় কুমার দে বলেন, ‘উদ্ভাবিত যন্ত্রে ব্যবহৃত রাসায়নিকের সর্বনিম্ন কার্য-পরিমাণ নির্ধারণ করে নিয়েছি। যা মশা কার্যকর ভাবে মারা যাবে এবং এর ব্যবহৃত রাসায়নিক মানুষের জন্য ক্ষতিকর কিনা তা যাচাই করেছি। তা ছাড়া আমরা তাকে কিছু দিক-নির্দেশনা দিয়েছি। এটা ব্যবহারের সময় কিছু সতর্কতা ও বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে।’
বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের প্রধান ড. ফুয়াদ হোসেন জানান, আমরা সামনে এটা নিয়ে আরও গবেষণা করতে চাই। এটার মেটফর্ট অপটিমাইজেশন এবং যন্ত্রের আরও কার্যকারিতা আমাদের গবেষণা ও সহযোগিতায় আরও আপডেট করতে পারবে।’
জানা যায়, যন্ত্র উদ্ভাবনের শুরুতে মোশারফ হোসেন অতিরিক্ত পরিমাণে রাসায়নিক ব্যবহার করতেন। পরে এ রাসায়নিকের সঠিক ও সর্বনিম্ন পরিমাণে এনে ব্যবহার বিধি দেন গবির গবেষকেরা। এ রাসায়নিকে মানুষের শারীরিক ক্ষতি যাতে না হয়, সে জন্য রাসায়নিকের সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে নির্দিষ্ট কার্যকর মাত্রার পরিমাপ তৈরি করা হয়।
রাসায়নিকের সহনীয় মাত্রা নির্ণয়ে কাজ করেছেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নিলয় কুমার দে, সহকারী অধ্যাপক ড. ফুয়াদ হোসেন এবং সহকারী অধ্যাপক মো. শাহ আলম।
গতকাল সোমবার এ মশকনিধন যন্ত্রের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব) ডা. লায়লা পারভীন বানু, রেজিস্ট্রার ড. এস. তাসাদ্দেক আহমেদ ও করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিট আবিষ্কারক অধ্যাপক ড. বিজন কুমার শীল।
মশকনিধন যন্ত্রের উদ্ভাবক মোশারফ হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এখন যে অবস্থায় আছি এই যন্ত্র সাড়ে ৫ হাজার টাকায় বিক্রির যোগ্য। সহায়তা পেলে আমি আরও কম খরচে এই যন্ত্র বাজারজাত করতে পারব। দেশে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমার মেশিন খুব ভালো সহায়তা করতে পারবে। আমি প্রধানমন্ত্রীর হাতে এই মেশিন তুলে দিতে চাই।’