আরবি জুলুম শব্দের অর্থ ব্যাপক। কোনো বস্তুকে তার নির্দিষ্ট জায়গা বা মর্যাদার বাইরে ব্যবহার করাকে জুলুম বলা হয়। পবিত্র কোরআনের অনেক আয়াতে তা এ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। তবে জুলুম বিশেষভাবে নিপীড়ন, নির্যাতন, সম্পদ আত্মসাৎ ইত্যাদি কাজ বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
পবিত্র কোরআনে শিরককে ভয়াবহ জুলুম আখ্যা দেওয়া হয়েছে। কারণ, মহান আল্লাহর দয়া ও প্রতাপের দাবি হলো, আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী হওয়া। সুতরাং আল্লাহর সঙ্গে অন্য কাউকে অংশীদার করা জুলুম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই শিরক মহা অন্যায়।’ (সুরা লোকমান: ১৩)
ইসলামে জুলুমের কোনো স্থান নেই। মহানবী (সা.) বলেন, ‘তোমরা জুলুম তথা অন্যায় থেকে বেঁচে থেকো। কারণ কেয়ামতের দিন জুলুম বহুমুখী অন্ধকার হয়ে দেখা দেবে।’ (মুসলিম)
বিদায় হজের ভাষণে মহানবী (সা.) বলেন, ‘প্রত্যেক মুসলমানের রক্ত, সম্পদ ও সম্মান অপর মুসলমানের জন্য হারাম।’ সুতরাং অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা, কারও সম্পদ কৌশলে আত্মসাৎ করা এবং কারও সম্মানহানি করা ইসলামের দৃষ্টিতে ভয়াবহ অপরাধ।
মহানবী (সা.) আরও বলেন, ‘তোমরা নির্যাতিতের বদদোয়া থেকে বেঁচে থেকো—সে অমুসলিম হলেও। কারণ, মজলুমের বদদোয়া এবং আল্লাহর মধ্যখানে কোনো অন্তরায় থাকে না। (বুখারি)
জালিম ব্যক্তি যত ইবাদতই করুক, তা তাঁকে জুলুমের শাস্তি থেকে রক্ষা করবে না। প্রতিটি জুলুমের হিসাব কড়ায়-গন্ডায় বুঝিয়ে দেওয়া হবে। মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি অন্যায়ভাবে কারও এক বিঘত জমিও আত্মসাৎ করবে, কেয়ামতের দিন সে পরিমাণ সাত স্তর জমি তার গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।’ (বুখারি ও মুসলিম)
আবদুল আযীয কাসেমি, শিক্ষক ও হাদিস গবেষক