চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় পাহাড়ের ভেতরের প্রাকৃতিক সুড়ঙ্গপথ দুই এলাকার মানুষের মাঝে সেতুবন্ধ গড়ে দিয়েছে। উপজেলার পোমরা ইউনিয়নের পশ্চিম পোমরা এলাকায় অবস্থান এই সুড়ঙ্গটির, যা স্থানীয়ভাবে ‘সুরঙ্গঢালা’ নামে পরিচিত। অল্প সময়ে নবাবীপাড়া ও বড়ঘোনা এলাকার এলাকার মানুষ এই পথে আসা-যাওয়া করেন। অন্যথায় ৩ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে আসতে হয় তাঁদের।
পাহাড়ি ওই সুড়ঙ্গপথটির দৈর্ঘ্য প্রায় আধা কিলোমিটার। তবে এটি খুবই সরু ও আঁকা-বাঁকা। কোথাও এটি দেড় ফুট আবার কোথাও এক ফুটের চাইতেও কম চওড়া পথটি। এখান দিয়ে বহু বছর ধরে যাতায়াত করেন আশপাশের ৪ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। যেখানে একদিক থেকে কেউ আসলে অপর দিকে যাওয়া যায় না। তাই যাওয়ার সময় এলাকার মানুষ মুখে শব্দ করে করে চলাচল করেন।
এই পথ দিয়ে নিজেদের পাশাপাশি গৃহপালিত গরু-ছাগলও নিয়ে যান মানুষ। যাওয়া-আসার পথে পাহাড়ের দুই পাশে চোখে পড়ে বিরল প্রজাতির নানা উদ্ভিদ। এলাকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত পাহাড়ের মাঝে এই সুড়ঙ্গ ঘিরে পর্যটনের সম্ভাবনা দেখছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
রাঙ্গুনিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রর থেকে এক কিলোমিটার পূর্বে গেলে সত্যপীর মাজার। এর বিপরীত দিকের সড়ক ধরে কিছু দূর এগোলেই বড়ঘোনা গ্রাম। গ্রামের পূর্বপাশে সারি সারি পাহাড়। পাহাড়ের পাদদেশে রয়েছে পশ্চিম পোমরার নবাবীপাড়া গ্রাম। এই গ্রামের মানুষ যদি বড়ঘোনা এলাকার সড়কপথে যেতে চান, তাহলে সত্যপীর মাজার এলাকা থেকে আরও আধা কিলোমিটার পূর্ব দিকে গিয়ে বুড়ির দোকান হয়ে যেতে হয়। এই পথের দূরত্ব প্রায় ৩ কিলোমিটার। অথচ চাষাবাদসহ জীবনযাপনের নানা বিষয়ে এক গ্রামের সঙ্গে অপর গ্রামের মানুষ ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আলমগীর রনি তালুকদার বলেন, চমৎকার পাহাড়ি পরিবেশে আঁকা-বাঁকা এই সুড়ঙ্গপথ ধরে এগোলে মোহনীয় এক অনুভূতি পাওয়া যায়। অতুলনীয় সৌন্দর্যমণ্ডিত এই সুড়ঙ্গটি অজপাড়াগাঁয়ে থাকায় এটি সকলের নজরে আসেনি। বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির উদ্ভিদের সঙ্গে এই পথে প্রাকৃতিক একটি পাহাড়ি ঝরনা আশপাশের ৫ গ্রামের মানুষের পানির চাহিদা মেটাতো। এই ঝরনায় আগের মতো স্রোতোধারা না থাকলেও এখনো পানির ধারা নিয়মিত বয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রশিদ (৮০) বলেন, ‘ব্রিটিশ আমল থেকেই আমরা এই পথে চলাচল করে আসছি। সুড়ঙ্গটি আগে আরও সরু ছিল। তবে চলাচল করতে করতে এটি বর্তমানে বড় হয়েছে।’