মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙন বেড়েছে। ইতিমধ্যে শতাধিক ঘরবাড়ি এবং এক শ একরের বেশি ফসলি জমি নদীভাঙনে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে শতাধিক বসতবাড়ি, বাজার, মসজিদসহ নানা স্থাপনা।
জানা গেছে, উপজেলার সাহেবরামপুর এলাকার পূর্ব সাহেবরামপুর লঞ্চঘাট এবং নতুন আন্ডারচর গ্রামে প্রতিবছরের মতো এবারও শুরু হয়েছে আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙন।
এই এলাকার শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে নতুন আন্ডারচর বঙ্গবন্ধু কলেজ, প্রাথমিক বিদ্যালয়, নবারুন উচ্চবিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
সাদিকুর রহমান নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, নদীভাঙনে অসংখ্য পরিবার ভূমিহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে আমাদের।
মাদারীপুর উপজেলার সাহেবরামপুর এলাকার পূর্ব সাহেবরামপুর লঞ্চঘাট এবং নতুন আন্ডারচর গ্রামে শুরু হয়েছে আড়িয়াল খাঁ নদের ভাঙন। এই এলাকার শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে।
ভাঙনের শিকার পূর্ব সাহেবরামপুর এলাকার জালাল সরদার বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমের শুরু এবং শেষের দিকে ভাঙন বাড়ে। প্রতিবছরই নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি, ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। আমরা মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে ফেলেছি। অনেক পরিবার অন্যের জমিতে আশ্রয় নিয়ে থাকছে।’
মজিদ ব্যাপারী বলেন, ‘ভাঙন প্রতিরোধে এখনই ব্যবস্থা না নিলে আমাদের গ্রাম পুরোপুরি হারিয়ে যাবে নদীগর্ভে। দ্রুত ভাঙন ঠেকাতে সরকারি সাহায্য দরকার।’
উপজেলার আন্ডারচর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আড়িয়াল খাঁ
নদ এর আগে হাজারো বসতবাড়ি কেড়ে নিয়েছে। বর্তমানে জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা না হলে এই গ্রামের ফসলি জমি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রক্ষা
করা সম্ভব হবে না।
সাহেবরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহিম মুরাদ সরদার বলেন, বর্তমানে আড়িয়াল খাঁ নদে পূর্ব সাহেবরামপুর গ্রাম ও লঞ্চঘাট এলাকার প্রায়
১৫ একর ফসলি জমি এবং দুই শতাধিক বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে নতুন করে দেড় কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে।
এদিকে নদীভাঙনের খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পিংকি সাহা, জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সানাউল কাদেরসহ অন্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
মাদারীপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সানাউল কাদের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নদীভাঙন রোধে কাজ করা হচ্ছে। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।’
এ ব্যাপারে ইউএনও বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে সেখানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।