ভাসমান বেদে সম্প্রদায়। আজ এখানে তো কাল সেখানে, নেই নিজস্ব কোনো ঠিকানা। কাপড় বা প্লাস্টিকের পর্দা দিয়ে ছাউনি বানিয়ে থাকে তারা। এটাই তাদের ঘর-বাড়ি। আগে কোনোমতে খেয়ে-পরে দিন চললেও করোনাসহ নানা কারণে সম্প্রতি তাদের আয় কমেছে। ফলে অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটছে তাদের।
মুক্তাগাছা উপজেলার নতুনবাজার এলাকায় দেখা যায় কয়েকটি বেদে পরিবারকে। ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে ছাউনি বানিয়ে অনেক দিন যাবৎ থাকে তারা। জানা গেছে, তারা ১৮টি পরিবার একসঙ্গে থাকে। ছোট-বড় মিলে মোট সদস্য সংখ্যা হবে ৭০ জনের মতো।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান সমাজ-ব্যবস্থা থেকে তারা এখনো অনেক পিছিয়ে। শিক্ষা-দীক্ষায়ও উন্নতি হয়নি। তাদের এক স্থান থকে অন্য স্থানে ছুটে বেড়াতে হয় কাজের সন্ধানে। অনেকেই বেছে নিয়েছেন ভিন্ন পেশা। দুঃসময়ে তাদের এই পেশা ধরে রাখাই কষ্টকর হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
বেদে পল্লিতে কথা হচ্ছিল মালেকের সঙ্গে। তিনি জানালেন, মেয়েরা বাড়ি বাড়ি ঘুরতে বাইরে চলে যায়। ছেলেদের মধ্যে কয়েকজন আছেন, বাকিরা গেছেন সাপ খেলা দেখাতে। আগের তুলনায় তাঁদের আয়-রোজগার কমেছে বহুগুণে।
আরেক সদস্য সুলতান জানান, করোনার কারণে তাঁদের বেশ ক্ষতি হয়েছে। মানুষ তাঁদের খেলা এখন আর দেখতে চায় না। মেয়েরাও বাড়ি-বাড়ি ঘুরে তেমন কিছু করতে পারে না।
স্থানীয় বাসিন্দা মনিরুজ্জামান আকাশ বলেন, ‘এরা কিছুদিন পর পর আসে, কয়েক মাস থেকে আবার চলে যায়। তারা তাদের মতো থাকে, আমাদের কোনো ক্ষতি করে না।’
ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মনসুর বলেন, করোনার প্রথমদিকে কয়েকবার তাদের খাদ্যসামগ্রীসহ হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক দেওয়া হয়েছে। তাদের ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়াসহ যেকোনো প্রয়োজনে তাদের সহযোগিতা করা হবে।