কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা শিবিরে অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গতকাল সোমবার ভোরে কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে অভিযান চালিয় ১০টি অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে র্যাব-১৫। এ সময় অস্ত্র তৈরির কারিগর কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরের সি ব্লকের বাসিন্দা বাইতুল্লাহ (১৯), তাঁর ভাই হাবিব উল্লাহ (৩২) ও একই ক্যাম্পের জি ব্লকের মোহাম্মদ হাছুনকে (২৪) আটক করা হয়েছে।
অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার র্যাব-১৫-এর উপ-অধিনায়ক তানভীর হাসান। তিনি জানান, রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা ক্যাম্প-৪ এক্সটেনশন-সংলগ্ন পাহাড়ে অস্ত্র কারখানা গড়ে তুলেছে এবং এ কারখানায় অস্ত্র তৈরি করে তা ক্যাম্পে সন্ত্রাসীদের সরবরাহ করে আসছে—এ তথ্য নিশ্চিত হওয়ার পর র্যাবের একটি দল সেখানে অভিযানে যায়। সন্ত্রাসীরা র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়েই গুলি ছুড়তে শুরু করে। জবাবে র্যাবও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়।
তানভীর হাসান জানান, প্রায় চার ঘণ্টা সন্ত্রাসীদের সঙ্গে গোলাগুলির পর সেখান থেকে ১০টি আগ্নেয়াস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। এ সময় তিন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে, যাঁরা ওই কারখানায় অস্ত্র তৈরির কারগির হিসেবে কাজ করতেন।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহমেদ সনজুর মোরশেদ বলেন, অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় র্যাবের পক্ষ থেকে মামলা রুজু করা হয়েছে।
সেই সঙ্গে তিন আসামিকে হস্তান্তর করেছে র্যাব।
আটক হাবিব উল্লাহ মিয়ানমারের বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) নেতা বলে জানিয়েছেন স্থানীয় রোহিঙ্গারা। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে শীর্ষ রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের জন্য আরসাকে দায়ী করে আসছিল তাঁর পরিবার। এ ঘটনার পর গত মাসের ২৩ অক্টোবর ক্যাম্পের একটি মাদ্রাসায় হামলা চালিয়ে ছয়জনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনাতেও আরসাকে দায়ী করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরসার অস্তিত্ব স্বীকার না করলেও রোহিঙ্গা শিবিরে এ সংগঠনের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের কাছে সাধারণ রোহিঙ্গারা জিম্মি হয়ে পড়েছেন বলে রোহিঙ্গা নেতারা জানান।
রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে অন্তত ২৫০ জন রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।