ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে ঘিরে শেষ মুহূর্তের প্রচারে মুখর হয়ে উঠছে পীরগাছা উপজেলা। তবে কেউই মানছেন না নির্বাচনী আচরণবিধি। নেচে-গেয়ে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে প্রার্থীদের পক্ষে। বেলা দুইটা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রচার-প্রচারণার নিয়ম থাকলেও কেউ মানছেন না। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে প্রচার। নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর ক্ষেত্রে দলীয় প্রধান ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর ক্ষেত্রে নিজের ছবি দিয়ে পোস্টার সাঁটানোর নিয়ম থাকলেও মানা হচ্ছে না।
অপর দিকে, মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা, মিছিল যেন নিত্য দিনের চিত্র। হোটেল-রেস্তোরাঁয় চলছে ভোটারদের আপ্যায়ন। পাড়ার দোকানগুলোতে গভীর রাত পর্যন্ত চলে চা-পান, সিগারেট দিয়ে ভোট প্রার্থনা।
গত রোববার সকাল থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পাড়ার দোকানগুলোতে মানুষের জটলা। প্রার্থীরা আসবেন জেনে বসে আছেন ভোটাররা। গানে গানে চলছে গভীর রাত পর্যন্ত প্রচার। উপজেলার কয়েকটি গ্রামে ভোটারদের সকালের নাশতা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট এলাকার ভোটাররা। চলছে বাড়ির আঙিনা ও উঠান বৈঠকে আপ্যায়নের ব্যবস্থা। সরকারি-বেসরকারি, ব্যক্তিমালিকানা ও বিভিন্ন স্থাপনাসহ ঘরের দেয়ালে দেয়ালে ছেয়ে গেছে নির্বাচনী পোস্টার। গাছপালাও রক্ষা পায়নি পোস্টারের হাত থেকে। অধিকাংশ প্রার্থীরাই রাত ১১-১২টা পর্যন্ত উচ্চ স্বরে মাইক বাজিয়ে নির্বাচনী সভা করছেন।
কথা হয় ফজলুল হক নামের এক ভোটারের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘নির্বাচিত হওয়ার পর প্রার্থীদের আর দেখা পাওয়া যায় না। ভোট পার হলেই কেউ চেনে না। তাই ভোটারের স্বভাব-চরিত্র পাল্টেছে। টাকা ছাড়া কেউ মুখ খুলতে রাজি না। কে হারবে, আর কে জিতবে তা নিয়ে মাথা ব্যথা নেই ভোটারদের।’
পীরগাছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার বলেন, গভীর রাত পর্যন্ত উচ্চ স্বরে মাইক বাজিয়ে চলে প্রচার-প্রচারণা। এতে পড়াশোনার মনোযোগ নষ্ট হয়।
কয়েকজন প্রার্থীর সঙ্গে কথা হলে তাঁরা জানান, দিনের বেলা সবাইকে বাড়িতে পাওয়া যায় না। তাই রাতে প্রচার চালানো হচ্ছে। আচরণবিধির বিষয়ে তাঁরা জানান, সবাই যে ভাবে করছে, তাঁরাও সেভাবে করছেন।
পীরগাছার আটটি ইউপি নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করছেন চারজন রিটার্নিং কর্মকর্তা। তাঁরা হলেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শোয়েব সিদ্দিকী, মৎস্য কর্মকর্তা হাকিবুর রহমান, সমাজ সেবা কর্মকর্তা এনামুল হক ও শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান।
কথা হলে তাঁরা আজকের পত্রিকাকে জানান, আচরণবিধির বিষয়ে এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দু’একদিনের মধ্যে ভ্রাম্যমাণ টিম মাঠে কাজ করবে।
জানা গেছে, উপজেলার ৮টি ইউপিতে আগামী ১১ নভেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে চেয়ারম্যান পদে ৪৩ জন, সংরক্ষিত সদস্য পদে ১২০ জন এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৩৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।