মিয়ানমারের রাখাইনের মংডু শহরের আশপাশের এলাকা দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে সীমান্ত সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তা ছাড়া রাখাইনের রাজধানী সিথুয়ের প্রবেশমুখের পোন্নাগিউন শহরও তারা দখলে নিয়েছে। এর মধ্যে জান্তা বাহিনী আকাশ ও জলপথেও বিদ্রোহীদের অবস্থান লক্ষ্য করে আক্রমণ চালাচ্ছে।
এদিকে রাখাইনের কয়েক দিনের যুদ্ধে টেকনাফ স্থলবন্দরে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কমেছে। টেকনাফ বন্দরের আমদানিকারকেরা জানান, সিথুয়ে বন্দর থেকে পণ্য আমদানি করা যাচ্ছে না। অনেক ব্যবসায়ীর আমদানি করা পণ্য আটকে আছে।
বন্দরের আমদানিকারক আবদুল্লাহ অ্যান্ড সন্সের মালিক মোহাম্মদ সাদ্দাম জানান, তিন দিন আগে ইয়াঙ্গুন থেকে তাঁদের একটি শুঁটকি, আদা ও নারকেলের বোট এসেছিল।
বন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে আমদানি খাতে ৩২৫টি বিল অব এন্ট্রির বিপরীতে রাজস্ব আয় হয়েছে ৪৩ কোটি ৬৮ লাখ ৩২ হাজার টাকা। আর রপ্তানি খাতে আয় হয়েছে ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
মিয়ানমারে তীব্র সংঘাতের কারণে এক সপ্তাহ ধরেই কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে গোলার বিকট শব্দ শোনা যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে এপারে কেঁপেও উঠছে। এতে সীমান্তঘেঁষা কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছে।
টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা, হোয়াইক্যং, সাবরাং ও টেকনাফ পৌরসভার নাফ নদীর ওপারে মংডু টাউনশিপ।
সীমান্তের বাসিন্দারা জানান, মংডু শহরের উত্তরে কুমিরখালী, বলি বাজার, নাকফুরা, নাইচাডং, কোয়াচিডং, কেয়ারিপ্রাং, পেরাংপ্রুসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টার শেল নিক্ষেপ চলছেই। রাতে ভারী অস্ত্রের বিস্ফোরণ এবং দিনে বিমান ও হেলিকপ্টার থেকে গোলাবর্ষণ করা হচ্ছে।
হ্নীলা ওয়াব্রাং এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ সোহেল জানান, ভোররাতের পর থেকে বজ্রপাতের মতো থেমে থেমে মর্টার শেলের শব্দ শোনা যাচ্ছে। মাঝে নাফ নদ থাকায় মানুষ প্রাণে বাঁচতে পারলেও বিকট শব্দে আতঙ্কে আছে।
এদিকে সীমান্তঘেঁষা বাসিন্দারা খেতে কাজ নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন বলে জানিয়েছেন হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী। তিনি বলেন, প্রায় সময় গোলাগুলি হচ্ছে। যুদ্ধ থামার লক্ষণ নেই। এখন অসুবিধায় পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ।
তবে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্ত স্বাভাবিক বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ।