প্রকৃতিতে আগমন ঘটেছে ঋতুরাজ বসন্তের। পুরোদমে না হলেও ধীরে ধীরে ধরা পড়ছে তার নানা চিহ্ন। ইট-সিমেন্টের ঢাকায় যে কয়েকটা জায়গায় বসন্তের ছাপ আগেভাগে গায়ে লাগে, তার অন্যতম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ছুটির দিনে এমনিতে ভিড় থাকে। বইমেলা ও ছুটির দিন থাকায় গতকাল সকাল থেকে হাজার হাজার মানুষের আগমনে উচ্ছল হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বইমেলা প্রাঙ্গণ।
১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এবারের বইমেলায় গতকাল ছিল প্রথম সাপ্তাহিক ছুটির দিন। অন্য দিন বেলা দুইটা থেকে শুরু হলেও ছুটির দিন হওয়ায় গতকাল তা শুরু হয়েছে বেলা ১১টায়। সকাল থেকে মেলায় লোকসমাগম শুরু হয়। বেলা গড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়তে থাকে। বিকেলের দিকে রীতিমতো ভিড় শুরু হয়।
তরুণ-তরুণীদের সংখ্যাধিক্য থাকলেও বয়স্ক ও কচিকাঁচাদের আগমনও ছিল নজর কাড়ার মতো। সজ্জিত হয়ে এসেছেন সবাই। তরুণীরা পরেছেন রংবেরঙের শাড়ি, খোঁপায় ফুল। পিতা-মাতার সঙ্গে আসা বাচ্চাদের পরনে উজ্জ্বল পোশাক। কেউ কেউ পরেছেন ভাষা ‘অ আ ক খ’ বর্ণমালাখচিত জামা।
ছুটির দিনে মেলায় এসেছিলেন ফাওজিয়া ফারহাদ অনীকা। তিনি জানান, লোকসমাগম দেখে করোনা-পূর্ববর্তী সময়ের কথা মনে পড়ছে। প্রাণ পাচ্ছে মেলা।
অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। তাতে কী, ভালো লাগছে, এই তো বেশ।
বইমেলা উদ্যাপনের জন্য কিছু স্বাস্থ্যবিধি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। জনসমাগমের জোয়ারে তা ভেসে গেছে। প্রবেশপথগুলোয় হুড়োহুড়ি আর গাদাগাদি থাকায় উপেক্ষিত হয়েছে শারীরিক দূরত্ব। ঠিকমতো মাপা যায়নি তাপমাত্রা।
মেলায় বসা খাবারের দোকানে করোনা টিকার সনদ দেখে খাবার বিক্রি করার নিয়ম থাকলেও কোনো দোকানেই তা মানতে দেখা যায়নি। এমনকি বাংলা একাডেমির ক্যানটিনেই টিকা সনদ দেখে খাবার বিক্রি করতে দেখা যায়নি।
স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না বলে স্বীকার করছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় গতকাল আরও চারজনকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ছুটির দিন হওয়ায় বিক্রি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আগামী প্রকাশনীর কর্ণধার। ক্রমে মেলা জমে উঠবে এবং বিক্রিও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি। কথাপ্রকাশ, বিদ্যাপ্রকাশ ও অবসর প্রকাশনীর স্টল এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রকাশকদের সঙ্গে আলাপ করেও একই ধরনের মত পাওয়া গেছে।