শান্তিগঞ্জ উপজেলার ছোট-বড় ২৩টি হাওরের কোথাও কোথাও আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে পুরোপুরি ধান কাটতে আরও দুই সপ্তাহ লাগবে।
এদিকে প্রথম দফায় পাহাড়ি ঢল থেকে রক্ষা পেয়েছে এ উপজেলার হাওরাঞ্চলের বোরোখেত। এমন অবস্থায় আর কয়েকটি দিন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেলে চলতি বোরো মৌসুমে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন কৃষি বিভাগ ও কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শান্তিগঞ্জ উপজেলায় মোট বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২২ হাজার ২০০ হেক্টর। এর মধ্যে হাইব্রিড ৮ হাজার ৪২৫ হেক্টর, উফশী ১ হাজার ৩৬১ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ১ হাজার ৬৫ হেক্টর এবং চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯২ হাজার ২২৬ মেট্রিক টন। ব্রি-২৮ ধান ২২ হাজার হেক্টর ও ব্রি-২৯ ধান ৪৭ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানান, বোরো ধান পাকতে শুরু করেছে। গতবারে শিলা বৃষ্টিতে কোনো কোনো হাওরের বোরো জমিতে সামান্য ক্ষতি হলেও এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলন হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন তাঁরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার নাগডোরা, দাউড়িকান্দি, দেখার হাওর, সাংহাইর হাওর, কাউয়াজুরী হাওর, জামখোলা হাওরসহ বিভিন্ন হাওরে আগাম জাতের ধান পেকেছে। হাওরে ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষক ও শ্রমিকেরা। কেউ খেত থেকে ধানের মুঠো টানছেন। কেউ চিটা ছাড়াচ্ছেন, কেউবা রোদে ছড়ানো ধান নাড়া দিচ্ছেন। পাশাপাশি কেউ কেউ মেশিন দিয়ে ধান কাটা ও মাড়াই কাজ করছেন।
জয়কলস ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামের কৃষক মো. মতিন মিয়া বলেন, ‘আগাম জাতের ব্রি-২৮ ধান চাষাবাদ করেছি। অতিরিক্ত তাপে এবং ব্লাস্টার রোগে আক্রমণের ফলে আগাম জাতের ব্রি-২৮ ধানে চিটা হয়ে যায়। তবে অন্যান্য জাতের ধান ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যে আমার অধিকাংশ বোরো ধান পাকতে শুরু করেছে। আগাম জাতের ধান কাটাও শুরু হয়েছে। আশা করছি আগামী সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে আমার বোরো ধান কাটার উপযোগী হবে।’
উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা টিটু চক্রবর্তী বলেন, ‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি বোরো মৌসুমে বোরোর বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপসহকারী প্রকৌশলী মাহবুব আলম জানান, এ উপজেলার অধিকাংশ বাঁধ সুরক্ষিত রয়েছে। এরপরও বাঁধ রক্ষায় প্রশাসন সার্বক্ষণিক তদারকি করছে। আগাম বন্যা থেকে হাওর রক্ষায় পাউবোর দল মাঠে কাজ করছে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনোয়ার উজ জামান বলেন, ‘আগাম বন্যা থেকে রক্ষায় কৃষকদের দ্রুত ধান কাটার পরামর্শ দিয়েছি।’