বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরে যানজটের অন্যতম কারণ সান্তাহার রেলগেট। ট্রেন চলাচল নির্বিঘ্ন করতে এই লেভেল ক্রসিংয়ের রেলগেটটি ২৪ ঘণ্টায় অন্তত ১০ ঘণ্টায় বন্ধ রাখা হয়। এ কারণে রেলগেটের উভয় পাশে আটকা পড়ে শত শত যান। এতে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তাই এই রেলগেটে একটি ওভার ব্রিজের দাবি জানিয়ে আসছেন সান্তাহারবাসী।
সান্তাহার রেলওয়ে জংশন স্টেশন কেবিন সূত্রে জানা গেছে, ব্রড গেজ লাইনে কোনো ট্রেন আক্কেলপুর স্টেশন থেকে ছাড়ার পর ১০/১৫ মিনিট পড়েই সান্তাহার রেল গেটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। সান্তাহার থেকে আক্কেলপুরের দূরত্ব প্রায় ২০ কিলোমিটার। আক্কেলপুর থেকে সান্তাহার ট্রেন পৌঁছাতে সময় লাগে ২০ থেকে ৩০ মিনিট। কয়েক বছর ধরে জনবলের অভাবে তিলকপুর স্টেশন বন্ধ থাকার কারণে আক্কেলপুর স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়লে সান্তাহার রেলওয়ে জংশন স্টেশনের রেলগেটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রায় ১০/১৫ মিনিট রেলগেটটি বন্ধ থাকে। আবার কোনো কোনো সময় আপ ও ডাউন উভয় দিকে ট্রেন থাকলে সময় বেশি লাগে। আবার মিটার গেজের ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রেও একই সমস্যার সৃষ্টি হয়।
সান্তাহার স্টেশন হয়ে প্রতিদিন ৪০টির মতো আন্তনগর, মেইল ট্রেন, সাধারণ ট্রেন, মালবাহী ট্রেন চলাচল করে। গড়ে ১০ মিনিট করে বন্ধ থাকলে প্রতিদিন রেলগেটটি বন্ধ থাকে ১০ ঘণ্টা। এ ছাড়া মালবাহী ট্রেন সান্টিং করার সময়ও রেল গেটটি বন্ধ রাখতে হয়।
রেলগেটের পশ্চিম পাশে রিকশায় বসে থাকা হেলাল উদ্দিন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘প্রায় ১৫ মিনিট ধরে রিকশায় বসে আছি। রেলগেটটি খুলছে না। প্রায় দিনই আমাকে এই ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এই সমস্যা কোনো দিনই কি দূর হবে না?’
রেলগেটের পশ্চিম পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ভ্যানচালক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘রেলগেটটি অনেক সময় ধরে বন্ধ রাখার কারণে আমাদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। এ সমস্যা দূর করা উচিত।’
সান্তাহার শহরে কোনো ট্রাফিক পুলিশ নেই। ফলে চালকেরা ইচ্ছে মতো রেল গেটের দুই পাশে অবৈধ রিকশা, সিএনজি স্ট্যান্ড বানিয়ে রেখেছেন। ওই স্থান সংকুচিত হয়ে পড়েছে। ফলে এখানে যানজটের এটিও একটি কারণ।
সান্তাহার শহরকে যানজট মুক্ত করতে সান্তাহার নাগরিক কমিটি দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। সমস্যাটি নিয়ে তারা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। এ ব্যাপারে নাগরিক কমিটির সভাপতি সাবেক অধ্যক্ষ মোসলেম উদ্দীন বলেন, ‘সান্তাহার রেলগেটে একটি ওভার ব্রিজ করার জন্য আমরা দাবি জানাচ্ছি। তাতে নাগরিকদের ভোগান্তি কিছুটা কমবে। এই লেভেল ক্রসিং ঘন ঘন বন্ধ থাকার জন্য যানজটের সৃষ্টি হয়, এতে নাগরিকদের ভোগান্তি হয়। অবিলম্বে এই সমস্যাটি দূর করার জন্য আমরা রেলগেটের ওপর একটি ওভার ব্রিজের দাবি জানাচ্ছি।’