শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় ইট, টিন ও বাঁশ দিয়ে ৫০ পরিবারের চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন পরাজিত সংরক্ষিত নারী সদস্যপ্রার্থী আমেনা বেগম (৪৭) ও তাঁর সমর্থকেরা। এ অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। উপজেলার ঘড়িষার ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের গোয়ালবাথান গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নড়িয়া থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে।
রাস্তা উন্মুক্ত করে দেওয়ার জন্য গতকাল বুধবার সকালে এলাকাবাসী বিভিন্ন ব্যানারে মানববন্ধন করেছেন। গৃহবন্দী হয়ে পড়া ওই সব বাড়ির মানুষ যাতায়াতের পথ খুলে দিতে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন তাঁরা।
এলাকাবাসী জানান, নির্বাচনে ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাঁদের মধ্যে ইসমতারা বেগম ক্যামেরা প্রতীকে জয়ী হন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আমেনা বেগম মাইক প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করে পরাজিত হন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ৫০ পরিবারের চলাচলের পথ বন্ধ করে দেন তিনি। এতে দৈনন্দিন কৃষিকাজসহ যাতায়াতে ভোগান্তিতে পড়েন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে পরাজিত প্রার্থী আমেনা বেগম বলেন, ‘আমি নির্বাচনে হেরেছি, তাই পথ বন্ধ করেছি, বিষয়টি এমন নয়। ওই জমি আমার পৈতৃক জমি, আমার ভাইদের জমিও আছে। জমিতে আমাদের প্রয়োজনে প্রাচীর দেওয়া হয়েছে।’
জসীম ঢালী, আব্দুর রহিম, মোতালেব ঢালী, ফিরোজ হাওলাদার, হাজেরা বেগম, সাহিদা বেগমসহ এলাকাবাসী বলেন, ৫০ বছর ধরে এ রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করছেন তাঁরা। অন্তত ৫০টি পরিবার এ রাস্তা ব্যবহার করে। ধান, গম, সরিষাসহ বিভিন্ন ফসল এই পথ দিয়ে আনা-নেওয়া করা হয়। কবর জিয়ারত করতে এ পথ দিয়েই যেতে হয়। কিন্তু আমেনা বেগম নির্বাচনে হেরে যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন। যাতায়াতের পথ খুলে দিতে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন তাঁরা।
এ ব্যাপারে ঘড়িষার ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুর রব খান বলেন, ‘এলাকাবাসী নাকি আমেনা বেগমকে ভোট দেননি। তাই নির্বাচনে পরাজিত হয়ে আমেনা বেগম চলাচলের পথ বন্ধ করে দিয়েছেন, একপক্ষ এমনটাই জানিয়েছেন আমাকে। এলাকায় বসবাস করলে সবাই মিলেমিশে চলতে হয়। কারও সহযোগিতা ছাড়া কেউ কি চলতে পারে! রাস্তা বন্ধ করা একটি ভুল সিদ্ধান্ত। আমেনার ভাইয়েরা বিদেশে থাকেন, বিষয়টি জানার পর থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে।’
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অবনি সংকর কর এ বিষয়ে বলেন, ‘ওই জমি আমেনা বেগমের পরিবারের। যেহেতু তাঁদের ব্যক্তিগত জমি, পথ খুলে দেওয়ার ব্যাপারটাও তাঁদের। বিষয়টি মানবিকভাবে বিবেচনা করতে হবে।’