জরাজীর্ণ একটি ঝুপড়িঘরে দিন কাটছে শেরপুরের শ্রবরদী উপজেলার গোসাইপুর ইউনিয়নের উত্তর মাটিয়াকুড়া গ্রামের বৃদ্ধা জবিলা খাতুনের (৯২)। বয়সের ভারে নুয়ে পড়েছেন তিনি, বিছানায় শুয়ে-বসে দিন কাটে তাঁর; কিন্তু সামান্য ঝড়-বৃষ্টিতে ওই জরাজীর্ণ ঘরে দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়েন তিনি। এই বিড়ম্বনা থেকে রক্ষা পেতে সরকারের কাছে একটি ঘর চেয়েছেন তিনি।
জবিলা খাতুন ওই এলাকার মৃত নুশে খাঁর স্ত্রী। প্রায় তিন যুগ আগে তাঁর স্বামী মারা গেছেন। তাঁর এক ছেলে আবদুর রহিম ঢাকায় রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। রহিম ঢাকায় থাকায় তাঁর ছেলে মো. মালেক দাদি জবিলার দেখাশোনা করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ছোট্ট একটি টিনের ঝুপড়িতে ভাঙা চৌকিতে অসহায়ভাবে শুয়ে রয়েছেন শতবর্ষী বৃদ্ধা জবিলা খাতুন। ঘরের বেড়া নেই। ওপরে দেওয়া হয়েছে ছেঁড়া পলিথিনের ছাউনি। দেখেই বোঝা যায় মানবেতর জীবনযাপন করেন বৃদ্ধা জবিলা খাতুন।
জবিলার নাতি মালেক বলেন, ‘আমি দরিদ্র মানুষ, রিকশা চালাই, একটি মাত্র ঘরে আমরা দুই ভাই থাকি। আমার পরিবারে তিন ছেলে ও দুই মেয়ে আছে। আমার দাদিসহ আটজনের পরিবার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। যেখানে ভাত জোগাড় করাই কঠিন, সেখানে ঘর দোব কীভাবে। সরকার যদি আমাগো সাহায্য করত, তবে একটু ভালোভাবে থাকতে পারতাম।’
জবিলার নাত উ ফাতেমা বলেন, ‘যদি আমাদের কেউ একটা ঘর দিত তা হলে আমার দাদি শাশুড়ি শেষ বয়সে একটু হলেও শান্তিতে থাকতে পারতেন।’
প্রতিবেশী মো. লিটন বলেন, বৃদ্ধা জবিলা খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। সরকারিভাবে একটি ঘর নির্মাণ করে দিলে খুব ভালো হতো তাঁদের জন্য।
গোসাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাজামাল ইসলাম আশিক বলেন, ‘আমরা এই বৃদ্ধার ব্যাপারে জানতাম না। আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। ইউনিয়ন পরিষদের সব সুবিধা পাওয়ার ব্যবস্থা তাঁকে করে দেওয়া হবে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইফতেখার ইউনুস বলেন, শিগগিরই তিনি বৃদ্ধা জবিলা খাতুনকে দেখতে যাবেন। তাঁর জরাজীর্ণ ঘরটি মেরামত বা সংস্কার করাসহ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান।