নাটোরের নলডাঙ্গায় চেয়ারম্যানের মারধরে আহত ছাত্রলীগের কর্মী জামিউল আলম জীবন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে লাইফসাপোর্টে চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে। যদিও জীবনের পরিবারের দাবি, তিনি মারা গেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত স্থানীয় পুলিশ, প্রশাসন ও রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জীবনের মারা যাওয়ার কোনো ঘোষণা দেয়নি।
ফেসবুক লাইভে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কথা বলায় জীবন ও তাঁর বাবা ফরহাদকে পিটিয়ে জখমের অভিযোগ ওঠে।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও নলডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ এবং তাঁর দুই ভাই আলীম আল রাজি শাহ ও ফয়সাল শাহ। এ ঘটনায় করা মামলায় গত বুধবার সকালে আলীম আল রাজি শাহকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জীবন রামশারকাজিপুর গ্রামের ফরহাদ হোসেন শাহের ছেলে ও উপজেলার আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম ফিরোজের ভাতিজা। এস এম ফিরোজ বলেন, ‘জীবন রামেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে মারা গেছেন; কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁকে মৃত ঘোষণা করেননি। কী কারণে লাশ হস্তান্তর করছেন না তা বুঝতে পারছি না।’
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, জামিউল আলম জীবনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আইসিইউতে তাঁর বাঁচার সুযোগ রয়েছে ৫০ শতাংশ।
অথচ জীবন গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মারা গেছেন, এমন খবরে ওই রাতে উপজেলা চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ।
মামলার বরাত দিয়ে নলডাঙ্গা থানার ওসি শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ফেসবুক লাইভে এসে জীবন নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন। গত সোমবার সন্ধ্যায় জীবনকে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পেটান চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, তাঁর দুই ভাই ও অজ্ঞাতপরিচয়ের আরও চার থেকে পাঁচজন। বাধা দেওয়ায় জীবনের বাবা ফরহাদ হোসেনকেও পেটানো হয়। মঙ্গলবার জীবনের মা জাহানারা বেগম বাদী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও তাঁর দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
এ ঘটনায় পর উপজেলা চেয়ারম্যান ও তাঁর আরেক ভাই আত্মগোপন করেন। কথা বলার চেষ্টা করে তাঁদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।