বটিয়াঘাটা ও ডুমুরিয়া উপজেলায় ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছেন ৬০ গ্রামের মানুষ। ভদ্রা নদীর পাড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ২৯ নম্বর পোল্ডারে এ গ্রামগুলো অবস্থিত। নদীভাঙনে ইতিমধ্যে বিলুপ্ত হয়েছে ডুমুরিয়া উপজেলার দুটি গ্রাম। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। নদীতে জোয়ারের পানি বেড়ে গেলেই বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দেয়।
জানা গেছে, ১৯৬৭-৬৮ সালে ভদ্রা নদীর জোয়ার ঠেকাতে একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। এই বেড়িবাঁধই হাজারো মানুষের নিরাপত্তার আশ্রয়। তবে জোয়ারে পানি বৃদ্ধি পেলে এবং বিভিন্ন দুর্যোগ এলে বেড়িবাঁধটি ক্ষতি ঠেকাতে পারে না। ইতিমধ্যে ভদ্রা নদীর ভাঙনে বিলুপ্ত হয়েছে ডুমুরিয়া উপজেলার ৪ নম্বর শরাফপুর ইউনিয়নের জালিয়াখালী ও সেজবুনিয়া গ্রাম দুটি।
প্রায় দেড় কিলোমিটারজুড়ে ছিল জালিয়াখালী গ্রাম। ১ হাজার ২০০ লোকের বসবাস ছিল এখানে। শতাধিক কাঁচাপাকা ঘরবাড়িসহ প্রায় ৫০০ বিঘা সম্পত্তি ভদ্রা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পাশেই অবস্থিত চাঁদঘর গ্রাম। এ গ্রামের প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মাঝেমধ্যে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভাঙন রোধে কাজ করে থাকে। অন্যদিকে বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালী ইউনিয়নের বারোআড়িয়া বাজার ও গ্রামটি নদীগর্ভে বিলুপ্ত হতে চলেছে।
বারোআড়িয়া গ্রামটির ৭০ ভাগ পরিবার নদীগর্ভে তাদের জায়গাজমি হারিয়েছে। বর্তমান বারোআড়িয়া এলাকায় জাইকার অর্থায়নে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় ভাঙন প্রতিরোধে ৭০০ মিটারজুড়ে জিও ব্যাগের কাজ চলছে। এখানেও চলছে চরম অনিয়ম-দুর্নীতি।
ভাঙন রোধে স্থায়ী কোনো টেকসই (ব্লক) ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এখনো। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় এই বেড়িবাঁধ রক্ষায় বিভিন্ন সময় একাধিক বেসরকারি এনজিও দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। ২৯ নম্বর পোল্ডারের মোট ১৩টি স্লুইসগেটের একটির আউটলেট রয়েছে। পানি সরবরাহের জন্য একমাত্র মাধ্যম এসব স্লুইসগেট।
ভাঙনকবলিত এলাকার ২৯ নম্বর পোল্ডারের পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে চটচটিয়া পানি ব্যবস্থাপনা অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এসব এলাকায় নদীভাঙন রোধে টেকসই বেড়িবাঁধের প্রয়োজন। না হলে বাকি গ্রামগুলো দিন দিন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।’
শরাফপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘নদীভাঙন আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে গেছে। এই ভদ্রা নদীর কবলে চাঁদঘড়সহ বেশকিছু গ্রাম এখন নদীগর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে। ইতিমধ্যে জালিয়াখালী গ্রামটি ভদ্রা নদীর কবলে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এই বেড়িবাঁধ রক্ষায় পাউবোর সহকারী প্রকৌশলী মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘এলাকায় নদীভাঙন রোধে কাজ শুরু হয়েছে। বাকি যেসব এলাকা রয়েছে সেগুলোর বিষয়ে আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।