চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণার পরপরই সমালোচনা ও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে নেতা-কর্মীদের মাঝে। দীর্ঘদিন যারা সংগঠন করে এসেছেন, কমিটির শীর্ষ দুটি পদে তাঁদের কারও নাম নেই। ভ্রাতৃপ্রতিম এই সংগঠনের কমিটিতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জায়গা পেয়েছেন আওয়ামী লীগের দুই নেতা।
শুধু তাই নয়, জাতীয় সংসদের হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর সহকারী একান্ত সচিব ও পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাবিবুল হক চৌধুরী পেয়েছেন অর্থ সম্পাদকের পদটি। আওয়ামী লীগের পটিয়ার জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মতুর্জা কামাল মুন্সিকেও সহসভাপতি করা হয়েছে।
দীর্ঘ এক দশক পর প্রত্যাশিত পদ না পাওয়ায় এবং যুবলীগের কমিটিতে আওয়ামী লীগের পদস্থ নেতাদের ঠাঁই দেওয়ায় ক্ষুব্ধ সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। গত বুধবার ১০১ সদ্যের মধ্যে ৩৫ জনের আংশিক কমিটি ঘোষণার পর ওই দিনই পদত্যাগ করেছেন দুই সহসভাপতি। তাঁরা হলেন মোহাম্মদ ফারুক ও পার্থ সারথী চৌধুরী। তাঁদের মধ্যে মোহাম্মদ ফারুক দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক ছিলেন আর পার্থ ছিলেন সদ্যবিদায়ী দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক।
ঘোষিত কমিটিতে আওয়ামী লীগের মতো মূল সংগঠনের পদে থাকার পরও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন যুবলীগে পদায়নকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের নতুন কমিটিতে সভাপতি করা হয় দিদারুল ইসলামকে। তিনি কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে আছেন আর সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম জহুর বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়া হেভিওয়েট প্রার্থী পটিয়ার আবদুল হান্নান লিটন পেয়েছেন সদস্যপদ। এ নিয়ে তাঁর অনুসারীরাও ক্ষুব্ধ।
আবদুল হান্নান লিটন বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক পদ পাইনি, এ ব্যাপারে আমার দুঃখ নেই। তবে আমাকে এভাবে অবমূল্যায়ন করা উচিত হয়নি।’
আওয়ামী লীগের পদে থেকেও যুবলীগের জেলা কমিটিতে সভাপতি পদ পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে দিদারুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই।
অনেক আগেই আমি পদত্যাগ করেছি।’
তবে শিকলবাহা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম ফোরকান বলেন, ‘দিদারুল ইসলাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আর আমি সাধারণ সম্পাদক। আমি ফেসবুকে দেখলাম, তিনি দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতি হয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম জহুর বলেন, ‘আমি একটি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাত্র।
আমি তো ছাত্রলীগ করার পর আর যুবলীগ করিনি। সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলাম। এখন যুবলীগের চেয়ারম্যান-সাধারণ সম্পাদক সারা দেশে যেহেতু ক্লিন ইমেজের নেতা-কর্মীদের দিয়ে সংগঠন সাজাচ্ছেন, যেহেতু একটা সুযোগ এসেছে, তাতে দোষের কি!’