মানবজীবনের ক্ষতিকর স্বভাবের মধ্যে অপচয় একটি। এটি মানুষকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ব্যক্তি ও সমাজজীবনে এর কুফল ব্যাপক। তাই ইসলাম অপচয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে এবং প্রয়োজন অনুসারে ব্যয় করতে উৎসাহিত করেছে। ইসলামের দৃষ্টিতে, বৈধ কাজে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যয় করাকে অপচয় বলে।
জীবনের সব পর্যায়ে অপচয়ের সীমাহীন কুফল বর্ণিত হয়েছে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে। অপচয়ের কারণে স্বামী-স্ত্রী ও পুত্র-কন্যার সম্পর্ক যেমন নষ্ট হয়, তেমনি অপচয়কারী সামাজিকভাবে নিন্দনীয় হয়ে যায়। তাই যারা অপচয় করে, ইসলাম তাদের শয়তানের ভাই বলে অভিহিত করেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর কোনোভাবেই অপচয় করো না। নিশ্চয়ই অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই। আর শয়তান তার রবের প্রতি খুবই অকৃতজ্ঞ।’ (সুরা ইসরা/ ২৬-২৭) এমনকি খাদ্য-পানীয়ের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় বস্তুও অপচয় করা যাবে না। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা খাও, পান করো কিন্তু অপচয় করো না। নিশ্চয়ই তিনি অপচয়কারীদের পছন্দ করেন না। (সুরা আরাফ/ ২৯)
আল্লাহর প্রিয় বান্দারা যেমন অপচয় করেন না, তেমনি তাঁরা প্রয়োজনের ক্ষেত্রে কার্পণ্যও করেন না। বরং তাঁরা সব সময় মধ্যম পন্থা অবলম্বন করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তারা যখন ব্যয় করে তখন অপব্যয় করে না এবং কার্পণ্যও করে না। বরং উভয়ের মাঝামাঝি অবস্থানে থাকে।’ (সুরা ফুরকান/ ৬৭)
আল্লাহর প্রকৃত বান্দা হতে হলে অপচয় ও অপব্যয় পরিহার করে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা আবশ্যক। মহানবী (সা.) বলেন, ‘ব্যয় করার ক্ষেত্রে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা ব্যক্তির বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক।’ তিনি আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি ব্যয় করার ক্ষেত্রে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করে, সে কখনো অভাবগ্রস্ত হবে না।’
ড. এ এন এম মাসউদুর রহমান: সহযোগী অধ্যাপক, ইসলামিক স্টাডিজ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়