সন্ধ্যা নামলে তাঁদের কর্মতৎপরতা বেড়ে যায়। রাত ১০টা পর্যন্ত গোপন কক্ষে তিনজনে মিলে মেয়াদ উত্তীর্ণ আটা ও তুষ দিয়ে তৈরি করেন গোখাদ্য (গমের ভুসি)। সেই ভেজাল খাদ্য নামীদামি কোম্পানির বস্তায় ভরে বিক্রি করেন চড়া দামে।
যশোরের মনিরামপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দক্ষিণ সীমানা ঘেঁষা একটি ঘর ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ভেজাল গো খাদ্য তৈরি করে আসছিলেন উপজেলার বিজয়রামপুর বাঁধাঘাটা এলাকার মফিজুর রহমান। স্থানীয় একাধিক গণমাধ্যম কর্মীর মদদে এ কাজ করছিলেন তিনি।
কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। গত শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৯টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত ১৬ বস্তা ভেজাল খাদ্য জব্দ করেছে। এ সময় আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) হরেকৃষ্ণ অধিকারী ভেজাল খাদ্য উৎপাদনের দায়ে মফিজুর রহমানকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সাইফুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যায় তাঁদের কাজ করতে দেখে স্থানীয় এক সাংবাদিক আমাদের খবর দেন। তখন আমরা ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে সেখানে অভিযান চালাই। ভেজাল এ খাদ্য গরুর দেহের কোনো উপকারে আসে না, বরং এ খাবার খাওয়ালে গরুর পেটের পীড়া দেখা দেয়।’
নকল গোখাদ্য কারখানার শ্রমিক রাজু হোসেন বলেন, ‘৩০০ টাকা মজুরিতে আমরা তিনজন সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কাজ করি। আটা, তুষ কুড়া, পালিস কুড়া ও ভুসি মিশিয়ে এখানে গরুর খাদ্য তৈরি করা হয়।’
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হরেকৃষ্ণ অধিকারী বলেন, ‘১৬ বস্তা ভেজাল গোখাদ্য জব্দ করে প্রাণী সম্পদ দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। তাঁরা এ খাদ্য পুড়িয়ে ফেলবেন।’
হরেকৃষ্ণ অধিকারী বলেন, ‘ভেজাল খাদ্য উৎপাদনের অভিযোগে মৎস্য ও পশু খাদ্য আইন ২০১০ এর ২০ ধারা অনুযায়ী অভিযুক্ত মফিজুর রহমানকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।’
গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা আবুজার সিদ্দিকী নিজ কার্যালয় চত্বরে উদ্ধার ভেজাল গোখাদ্য পুড়িয়ে ফেলেন।